ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জাল সনদে প্রভাষক, মামলা করতে এনটিআরসিএ’র চিঠি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৮
জাল সনদে প্রভাষক, মামলা করতে এনটিআরসিএ’র চিঠি বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: জাল সনদে প্রভাষক পদে চাকরি করায় অভিযুক্ত শিক্ষক শাহনা পারভীনের বিরুদ্ধে মামলা করতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে লিখিত নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। 

শাহনা আক্তার লালমনিরহাটের বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক। স্থানীয় খোদাবাগ এলাকার সৈয়দুল হোসেনের মেয়ে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এনটিআরসি’র চিঠি থেকে জানা যায়, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু তার বাবার নামে লালমনিরহাটের বড়বাড়িতে শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ পদ থেকে চলতি বছরের ২ আগস্ট অবসর গ্রহণ করেন। এরপর প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন উপ-অধ্যক্ষ গোলাম মর্তুজা মিঠু।

২০০৯ সালে একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি পদে নিয়োগ দেন তৎকালীন অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদ। সেই নিয়োগে ইতিহাস বিভাগে শাহনা পারভীন নামে একজন শিক্ষক রোল ২২০৮০৫১২ ও রেজি নং ৬১৭৩৫৭১ উল্লেখ করে দ্বিতীয় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদ দিয়ে গত ২০১০ সালে ১০ নভেম্বরে এমপিও ভুক্ত হন। যার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল বলে সনাক্ত করেছেন এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ। জাল সনদধারী শাহনা পারভীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ১১ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অঞ্চল রংপুরের উপ-পরিচালক বরাবর চিঠি পাঠান এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক মোস্তাক আহমেদ।  

এর প্রেক্ষিতে ২৫ অক্টোবর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে নির্দেশনা দিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আখতারুজ্জামান।

মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানোর এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলা করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত শিক্ষক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ম্যানেজ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে স্থানীয় একটি সূত্র দাবি করেছে।

শুধু ইতিহাস বিভাগের শাহনা পারভীন নয়, সহকারী গ্রন্থগারিক পদে উপাধ্যক্ষ গোলাম মর্তুজার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মাহবুবা আক্তারসহ ৭/৮ জন শিক্ষকের সনদ জাল বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করেছে।  

সূত্রটির দাবি, ২০০৯ সালের সেই নিয়োগে জাল সনদে অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকার উপরে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতোদিন টাকার জোরে সব গোপন রাখলেও অধ্যক্ষ অবসর নেওয়ায় পর থেকে সব তথ্য বের হতে শুরু করেছে।

সনদটি নিজের দাবি করে শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক শাহনা পারভীন বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তবে খবর প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন তিনি।

শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের দায়িত্বে উপাধ্যক্ষ গোলাম মর্তুজা বাংলানিউজকে জানান, পাঠাতে এক মাস হলেও সবেমাত্র চিঠিটা পেয়েছেন তিনি। চিঠির নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হবে। তবে শাহনা পারভীন বাদে বাকি সাত শিক্ষকের বিষয়টি সংবাদের প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন তিনি।

লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বাংলানিউজকে জানান, মামলা করতে নির্দেশ দেওয়া এনটিআরসিএ’র চিঠিটা দেখেছি। তবে মামলা দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। নিয়মানুযায়ী মামলা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।