ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভাঙনের হুঙ্কার দিয়ে পানিপ্রবাহ কমছে পদ্মায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
ভাঙনের হুঙ্কার দিয়ে পানিপ্রবাহ কমছে পদ্মায় উত্তাল পদ্মা। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: পাঁচ বছর পর আগ্রাসী হয়ে উঠেছে পদ্মা। প্রতিদিনই হু হু করে পানি বাড়ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) হঠাৎ করেই পানি কমেছে চার সেন্টিমিটার। পানি ‍উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, তাদের কাছে যে পূর্বাভাস রয়েছে, সে অনুযায়ী নদীর পানি স্থিতিশীল হয়ে আসবে। তাই আর ভয় নেই।

মঙ্গলবার মহানগরীর টি-বাঁধে গিয়ে দেখা যায় ভাঙন ঠেকাতে সেখানে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। দুই হাজার জিও ব্যাগ সেখানে পর্যায়ক্রমে ফেলার কাজ চলছে।

তবে পাউবো বলছে ভাঙন নয় টি-বাঁধের পাশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) স্পিড বোট ভেড়ানোর জন্য জিও ব্যাগ ফেলে ঘাট তৈরি করা হচ্ছে। ভাঙনের আতঙ্ক নেই।

জানতে চাইলে রাজশাহী পাউবোর গেজ রিডার এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, পদ্মা নদীর পানি বাড়ছেই। সোমবারও (১৭ সেপ্টেম্বর) চার সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৮ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। সোমবার পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার।

তবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা রাজশাহীর বড়কুঠি পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় চার সেন্টিমিটার পানি কমেছে। পানিরপ্রবাহ বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আরও একটু কমলেই বলা যাবে ভয় নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে অতীতের পরিসংখ্যান টেনে গেজ রিডার এনামুল হক বলেন, উৎকণ্ঠা থাকলেও এখনই আতঙ্কের কিছু নেই। এর আগে ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট রাজশাহীতে পদ্মার পানিরপ্রবাহ উঠেছিল সর্বোচ্চ ১৮ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার। এরপর আর বাড়েনি। বরং পরদিন ২৯ আগস্ট থেকে পদ্মার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।

এনামুল হক আরও বলেন, গেল ১৫ বছরে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা (১৮ দশমিক ৫০) অতিক্রম করেছে মাত্র দুইবার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা নয় বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কেবল ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। এর পর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মা নদীর সর্বোচ্চ উচ্চতা দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার।

এদিকে, রাজশাহীতে পদ্মার পানি এক সপ্তাহ থেকে বিপদসীমার কাছাকাছি থাকায় এরই মধ্যে নদী তীরবর্তী পবা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে সেখানকার অর্ধশতাধিক পরিবার চরম দুর্ভোগের মধ্যেদিয়ে দিন-রাত অতিবাহিত করছেন।

রাজশাহী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, পানি বাড়ছে, এটা ঠিক। তবে আজ পানি কমেছে। আর তাদের কাছে যে পূর্বাভাস রয়েছে, সে অনুযায়ী নদীর পানি স্থিতিশীল হয়ে আসার সম্ভাবনেই বেশি।

সাধারণত ১৯ সেপ্টেম্বরের পর আর পানি বাড়বে না। কমতে থাকে। তাই বন্যা বা ভাঙন নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এছাড়া শহর রক্ষা বাঁধের কোথাও নাজুক অবস্থায় নেই। কোথাও ভাঙনও নেই। এর পরও পানি কমতে শুরু করলে আক্রান্ত হওয়া পবা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
এসএস/ওএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad