ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই ভোট হতে হবে: সুজন সভাপতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই ভোট হতে হবে: সুজন সভাপতি

ঢাকা: কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হতে হবে। 

রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন ও সুষ্ঠু নির্বাচন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সুজন সভাপতি বলেন, এদেশে এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি।

কেবল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল। জাতীয় তাই জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ধংস করে দিয়েছে। ফলে বিচার বিভাগের ১১ জনের বিচারপতির জায়গায় এখন মাত্র চারজন বিচারপতি রয়েছেন। অথচ সরকারি দলের লোকেরাই বলছেন- মামলা জটে পড়েছে।

সরকার চাইলে সবই সম্ভব উল্লেখ করে এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, এক দলের নেতাকর্মীদের জেলে রেখে, অন্যদিকে নির্বাচনের আগেই সরকারি দলের নেতারা সরকারি খরচে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এই সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় হবে না।

নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের আয়োজন হচ্ছে উল্লেখ করে সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকার আইনকে অস্ত্রে পরিণত করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও ইভিএম চালু করছে। আমরা এসবের অবসান চাই। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।  

আলোচনায় মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, সরকার চাইলে রাতারাতি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর চেহারা পরিবর্তন হয়ে যাবে। নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আগে ভোট চুরি হতো। এখন ভোট চুরির মধ্যে নেই, এখন ডাকাতির মধ্যে ঢুকে গেছে।

রাজনৈতিক দল ও সেনা শাসকদের দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার জন্য একটি স্থায়ী জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি দরকার।  

গণফোরামের নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। তাদের দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে।  

গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিআর আববার, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সাবেক এমপি এস এম আকরাম প্রমুখ।

এতে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলিপ কুমার সরকার। প্রবন্ধে বলা হয়, স্টেকহোল্ডারদের মতামত উপেক্ষা করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-তে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভেএম) চালু, খেলাপি ঋণ পরিশোধের শর্ত শিথিলসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এগুলো না করার দাবি জানাই।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের আইন প্রণয়ন, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, না ভোটের আইন পুনঃপ্রবর্তন, মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিলের বিধান সংযোজনসহ ১৫ দফা সুপারিশও করা হয় মূল প্রবন্ধে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮
এমএফআই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।