ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নির্মাণকাজ শুরুর এক বছরেই ঝুঁকিতে হাইটেক পার্ক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮
নির্মাণকাজ শুরুর এক বছরেই ঝুঁকিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণাধীন ‘বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক’। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বরে রাজশাহীতে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক’র নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) তার এক বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু এরইমধ্যে আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে কীর্তিনাশা পদ্মা।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মার পানি আছড়ে পড়ছে প্রকল্প এলাকায়। ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে ২৮১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক।

প্রশ্ন উঠেছে বিপুল অংকে নির্মিত প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা নিয়েও।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীর গতিপথ না পাল্টানো গেলে হাইটেক পার্কের স্থায়ীত্ব নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটবে না কিছুতেই। এরই মধ্যে পদ্মার উপচে পড়া পানি প্রকল্প এলাকা ছুঁই ছুঁই করছে। ফলে এটি সহজেই অনুমেয় যে কেবল বাঁধ দিয়েই ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে না আড়াইশ কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্প। তবে হাইটেক পার্কটি রক্ষার জন্য তিনস্তরের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।    

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সেখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য গত বর্ষায় তারা সোয়া দুই কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিলেন। কিন্তু পেয়েছিলেন মাত্র ৫০ লাখ টাকা। ফলে তা দিয়েই জিও ব্যাগ ফেলে গত বছর কোনো রকমে প্রকল্প এলাকা রক্ষা করা হয়েছিল।

কাগজে অাঁকা ‘বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক’পরে শুষ্ক মৌসুমে ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীতীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করে পাউবো। এর আওতায় নদীর পাড়টি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এটি প্রাইমারী প্রটেকশনের কাজ করবে। আর নদীশাসন ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে আমরা আগামী শুষ্ক মৌসুমে হাইটেক পার্কের সামনের অংশে নদী ড্রেজিং করে দিব। তাই আমরা মনে করি এই তিনটা কাজ যখন শেষ হবে তখন সুরক্ষাটাও অনেকাংশে সুদৃঢ় হবে।
 
তবে মাত্র ছয় কিলোমিটার ড্রেজিং করে পদ্মা প্রবাহের গতিপথ পাল্টানো যাবে না বলে মনে করেন পানি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন এই প্রকল্প রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। না হলে আগামী দিনে ভাঙন মোকাবেলায় ঝুঁকি থেকেই যাবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সরোয়ার জাহান সজল বাংলানিউজকে বলেন, যদি শুধু সামনের অংশটুকুই ড্রেজিং করা হয় তাহলে বর্ষাকালে আসলে সেখানে আবার পলি জমে যাবে। ফলে নদী সুরক্ষা সেই একই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বার বার। তাই নদীর গতিপথটাকে গবেষণা করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় যেতে হবে। না হলে সব উদ্যোগই ভেস্তে যাবে।

রাজশাহী মহানগরের পশ্চিমে থাকা রাজপাড়া থানার পদ্মা তীরবর্তী নবীনগর মৌজার ৩১ দশমিক ৬৩ একর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক’। ২৮১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির আদলে গড়ে উঠেছে এটি। তবে মোট নির্মাণ ব্যয়ের মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৪৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

প্রকল্পটির বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে তিন বছর। বর্তমানে সীমানা প্রাচীরসহ পার্কের দশতলা বিশিষ্ট এমটিবি ভবন নির্মাণ কাজ চলছে।

হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার, আউটসোর্সিং থেকে শুরু করে গবেষণাসহ তথ্যপ্রযুক্তির সব কাজই হবে এখান থেকে। এর নির্মাণ কাজ শেষ হলে সেখানে কমপক্ষে ১৪ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮
এসএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।