ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঝুঁকিতে কিচেন মার্কেট, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ইয়াসির আরাফাত রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
ঝুঁকিতে কিচেন মার্কেট, দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশের পাইকারি বাজার খ্যাত কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের শোচনীয় অবস্থা। ভেঙে পড়ছে দেওয়ালের পলেস্তারা, বের হয়ে পড়েছে পিলার ও ছাদের রড। ভেঙে পড়া ছাদ ও পিলারের পলেস্তর রক্ষায় অস্থায়ীভাবে ব্যবসায়ীরা লোহার খুঁটি ও কাঠ দিয়ে রেখেছেন। কোনো কোনো স্থানে একাধিক লোহার খুঁটি দিয়ে পিলারের কাজ চালানো হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। হতে পারে একাধিক মানুষের প্রাণহানি।

এদিকে ব্যবসায়ীরাও এ বাজারের বিকল্প দেখছেন না। আর সিটি করপোরেশন বলছে, অচিরেই এ মার্কেট অন্যস্থানে স্থানান্তর করা হবে।

 

বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কারওয়ান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মার্কেটের পিলার ভেঙে গেলে সমস্যা নেই, মার্কেট অনেক মজবুত করে তৈরি করা। এখানে কোনো ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা নেই। আর মৃত্যু হলে সব জায়গাতেই মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কিচেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।  

সিটি করপোরেশন বলছে, মার্কেট স্থানান্তর করার জন্য কনস্ট্রাকশনের কাজ করা হয়নি।  

ব্যবসায়ীদের মতে, কিচেন মার্কেটে সাড়ে ৫শ ব্যবসায়ী রয়েছেন। চাল, ডাল, কসমেটিকসের পাইকারি মার্কেট এটি। এছাড়া এখানে বিক্রি হয়, মাছ-মাংস, চিনিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য।

এ বাজারের চাল বিক্রেতা জুবায়ের আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, মার্কেটের পিলারের অনেক মোটা ধরনের রড দিয়ে পিলার তৈরি করা হয়েছে। সিমেন্ট-বালি খসে পড়লেও রডগুলো মার্কেটকে রক্ষা করবে। এখানে দুর্ঘটনার কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমমাছ ব্যবসায়ী শহিদ বলেন, মার্কেটের পিলার ও ছাদের পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে, নতুন করে পলেস্তর করলে ঠিক হয়ে যাবে। তাছাড়া এ মার্কেটটির ওপরে তেলের বাজার হওয়ায় তেল পড়ে পলেস্তারা খুলে গেছে বলে জানান তিনি।  

এ মার্কেট অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হবে এ বিষয়ে কিছু জানেন কি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কারওয়ান বাজার ছেড়ে যেতে চাই না। এ বাজারের বিকল্প কোনো বাজার নেই। সরকার মার্কেট সরানোর বিষয়ে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করবেন।

কারওয়ান বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সমন্বয়ে গঠিত ইসলামী শান্তি সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এ মার্কেটটির দায়িত্ব ১৯৮৪ সালে আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মাত্র ৩৪ বছরে এটিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কোনো সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, এ মার্কেটটি বুয়েটের নাম করা প্রকৌশলী দিয়ে তৈরি করা। যেসব স্থানে পলেস্তারা খুলে পড়েছে সেখানে নতুন করে কাজ করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।  

একইসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সে দায়ভার সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম অজিয়ার রহমান মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের অবস্থা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য অনেক আগেই এটাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। খুব কম সময়ের মধ্যেই এ মার্কেটটি অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। এরপরও ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো করে দুর্ঘটনারোধের চেষ্টা করছেন। এটা আমাদের জানা ছিল না। তবে আমি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাবো, যাতে তারা সংস্কার করে দেন।

এর আগে রোববার (৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন জাতীয় সংসদে বলেছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারসহ তিনটি চিকেন মার্কেট মহাখালী, যাত্রাবাড়ী ও আমিনবাজারে স্থান্তান্তর করা হবে। এ লক্ষ্যে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাখালী, যাত্রাবাড়ী ও আমিনবাজারে তিনটি পাইকারি বাজার নির্মাণ করা হচ্ছে। এর নির্মাণ কাজ আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
ইএআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।