ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মজুরি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া গার্মেন্টস শ্রমিক-মালিকের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
মজুরি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া গার্মেন্টস শ্রমিক-মালিকের গার্মেন্টস শ্রমিকরা কাজ করছেন, ফাইল ফটো

ঢাকা: সর্বনিম্ন আট হাজার টাকা রেখে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি ঘোষণা করায় শ্রমিক-মালিক উভয়পক্ষের মধ্যেই দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। শ্রমিক নেতারা এ মজুরি প্রত্যাখান করেছেন আর মালিক পক্ষ বলছে, মজুরি বাড়াতে হলে কর কমানোর পাশাপাশি প্রণোদনা দিতে হবে কারখানায়।

বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টম্বর) বিকেলে সচিবালয়ের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সর্বনিম্ন আট হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।

এ নিয়ে গামেন্টস শ্রমিক ও শিল্প রক্ষা জাতীয় কমিটির সমন্বয়ক আবুল হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, এখন সব জিনিসের দাম বেড়েছে।

বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। তাই আমাদের দাবি ছিল ১৬০০ টাকা নূন্যতম মজুরি। সেখানে তার অর্ধেক করা হয়েছে কোন যুক্তিতে সেটা জানি না। এতে শ্রমিক অসন্তোষ আরও বাড়বে।

গামেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বাংলানিউজকে বলেন, আট হাজার টাকা সর্বনিম্ন মজুরি আমরা প্রত্যাখান করছি। কোনো শ্রমিকের কাছে এই ঘোষণা গ্রহণযোগ্য হবে না। আমাদের আন্দোলন চলবে যতোক্ষণ না পর্যন্ত ১৬ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরির ঘোষণা আসবে।

এদিকে, আবার এ মজুরি নিয়ে মালিক পক্ষের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাদের যুক্তি এখন গামেন্টসের অবস্থা বেশি ভালো না। ঘোষিত মজুরি অনেক বেশি হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখন গামেন্টসের অবস্থা তেমন ভালো না। বায়াররা টাকা দিলে আমি শ্রমিককে দেবো। কিন্তু বায়াররা এখন টাকা দেয় না। আমাদের জন্য ছয় হাজার ৩০০ টাকাই সঠিক ছিল। না হলে বেতনের অভাবে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তারপরও সরকার যেটা করেছে এতে শ্রমিকের চুপ থাকা উচিত। শ্রমিককে নিয়েই আমাদের ব্যবস্যা। শ্রমিক বাঁচলে কারখানা বাঁচবে। আমরা শ্রমিককে বাঁচাতে চাই, আবার নিজেরাও বাঁচতে চাই। অতিরিক্ত কিছু করা হলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি ও সংসদ সদস্য সেলিম উসমান বাংলানিউজকে বলেন, সরকার যে বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে এতে আমাদের কর কমাতে হবে, প্রণোদনা দিতে হবে। এমনিতেই আমাদের অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, এই অবস্থায় অনেক বেশি চাপিয়ে দিলে আমরা চলতে পারবো না। সরকার সুবিধা দিলে আমরা মেনে নেবো।

তিনি বলেন, শ্রমিক নেতারা যদি এ বেতন না মানেন আমরাও মানবো না। এখনও সময় আছে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবো। সব বিষয়ে জানাবো তাকে।

সেলিম উসমান বলেন, শ্রমিক নেতারা এ বেতন প্রত্যাখান করেছেন কোন যুক্তিতে আমার সেটা জানা নেই। তারা প্রত্যাখান করলে আমরাও বলবো এটা মানি না। আগে মালিকদের সুবিধা দেওয়া হোক, পরে মালিকরা শ্রমিকদের বেতন বাড়াবে। মনে রাখতে হবে, আমার শ্রমিক, আমার মায়াই বেশি। অন্যের মায়ার মধ্যে ষড়যন্ত্র আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
ইএআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।