ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তৎপর পুলিশ, নিমেষেই যানজট উধাও 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
তৎপর পুলিশ, নিমেষেই যানজট উধাও  যানজট নিরসনে তৎপর পুলিশ-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা (সাভার): রাত পোহালেই ঈদ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে গরুর গাড়ি কিংবা বাসের ছাদে যেভাবেই হোক ফিরতে হবে বাড়িতে। তাই ঘুম নেই গার্মেন্টস শ্রমিক সালেহা বেগমের চোখে। 

মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) ভোরবেলা উঠেই নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে নেন তিনি। ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ছেলেকে।

ছোট ছেলে নাফিস স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে কাজ করে। সোমবার (২০ আগস্ট) দুই হাজার টাকা বেতন নিয়ে মালিকের কাছ থেকে ঈদের ছুটি নিয়েছেন। বড় ছেলে মনিরুল অন্য একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সোমবার তার অফিস ছুটি হলেও দোকান মালিক নাফিসকে ছুটি না দেওয়ায় মঙ্গলবার তাদের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হতে হয়।  

সকালে কোনো রকমে জিনিসপত্র গুছিয়ে মায়ের সঙ্গে ব্যাগ-বস্তা নিয়ে বের হন গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে। কিন্তু রাস্তায় বের হয়েই পড়েন বৃষ্টির কবলে। কি আর করবেন সময় কম, সঙ্গে পরিবহন সংকট তো আছেই।  

দরদাম করে মা ও ভাইকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজেই উঠে পড়েন একটি বাসে। বাসে উঠেও স্বস্তি নেই মনিরুলের। তিন ঘণ্টায় বাস এগিয়েছে মাত্র দুই কিলোমিটার। এরইমধ্যে বৃষ্টি শেষ হয়ে রোদ উঠেছে। এসময় যাত্রী বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাকে গাড়ির ভেতর থেকে ছাদে চলে যেতে হয়।  

এদিকে হঠাৎ করেই মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সকাল থেকে যে যার মতো চলাচল করলেও পুলিশ সুপার আসছে এমন সংবাদে তাদের কাজের গতি বেড়ে যায়। এসময় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা উল্টোপথে কোনো যানবাহন আসলেই আটকে দিতে থাকে। সেইসঙ্গে অনেককে দেখা গেছে, পথচারী এবং যাত্রীদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়াতে।

তবে যাই হোক পুলিশের এ তৎপরতা দেখে সাধারণ মানুষ খুশি। অনেকেই তাদের কাজের প্রশংসা করেন। এসময় থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদেরও রাস্তায় কাজ করতে দেখা গেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুপুরের পর থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দীর্ঘ যানজট নিমেষেই কমতে থাকে। এসময় সড়কে কিছুটা ধীরগতিতে চলতে দেখা যায় যানবাহন। ফলে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি লক্ষ করা গেছে।  

কেউ কেউ বলতে থাকেন, পুলিশ যেভাবে কাজ করছে এটা যদি আরও আগে করতো তাহলে আগেই যানজট কমে যেত। বর্তমানে মহাসড়কের যানজট না থাকলেও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপে কিছুটা ধীর গতি রয়েছে।  

পুলিশ কর্মকর্তাদের বিশ্বাস এটাও সন্ধ্যার পর আর থাকবে না। সকালে বৃষ্টি হওয়ায় যানবাহনগুলোর দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় তাদের তৎপরতায় দীর্ঘ সারি কমে এখন থেমে থেমে চলছে গাড়ি। এভাবে চলতে থাকলে সন্ধ্যা নাগাদ মহাসড়কে কোনো যানজট থাকবে না।

ঢাকা জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) আবুল হোসেন বলেন, রাত পোহালেই ঈদ। সবাই একযোগে বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাস্তায় নামায় সকালে যানবাহনের দীর্ঘ সারি লক্ষ করা গেছে। এসময় আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যানজট নিরসন না করে মধ্যাহ্নভোজ করবো না। আমাদের পুলিশ সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বর্তমানে মহাসড়কে যানজট নেই। স্বাভাবিকভাবে যান চলাচল করায় আমি মাত্র (বিকাল ৪টা ২০ মিনিট) দুপুরের খাবার খেতে বসেছি। যে পরিমাণ গাড়ি সকাল থেকে ঢাকার বাইরে গেছে আশা করি সন্ধ্যার পর মহাসড়কগুলো যানবাহনশূন্য হয়ে পড়বে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।