ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

স্বল্প আয়ের মানুষ ছুটছে বাসের ছাদে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
স্বল্প আয়ের মানুষ ছুটছে বাসের ছাদে! জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে চড়ে বাড়ি যাচ্ছে স্বাল্প আয়ের মানুষ। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় বেড়েই চলেছে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে। সকাল থেকে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়।

কাঁঠালবাড়ী বাস টার্মিনালে তিল ধারণের ঠাঁই যেন নেই। দূরপাল্লার বাস, মাইক্রোবাস ও থ্রি-হুইলার গাড়িতে নিজের স্থান করে নিতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে ঘরমুখো যাত্রীরা।

যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপকে পুঁজি করে পরিবহনগুলো আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া। তবে বাড়ি ফিরতেই হবে। তাই অতিরিক্ত ভাড়ার চাপকে পায়ে ঠেলে পরিবহনে উঠছে যাত্রীরা।

মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) সকালে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা যায়। দূরপাল্লার পরিবহনের ছাদে উঠার প্রতিযোগিতায় নেমেছে এক শ্রেণীর যাত্রীরা। ঝুঁকি জেনেও ভাড়া কিছুটা কম হওয়ায় বাড়ি ফিরতে গাড়ির ছাদকেই আসন হিসেবে বেছে নিচ্ছেন তারা।

গোপালগঞ্জের যাত্রী সামির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ‘ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। মঙ্গলবার সকাল থেকে তার ছুটি হয়েছে। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই আর দেরি না করে রওনা দিয়েছেন বাড়ির পথে। স্বল্প আয়ের মানুষ তিনি। বাড়ি ফিরতে ঈদ মৌসুমে পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া সব জায়গাতেই। তবে গাড়ির ভেতরের চেয়ে ছাদে ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম। তাই ছাদে উঠেছেন তিনি।

ছাদে করে যাতায়াত ঝুঁকি জেনেও অপর এক যাত্রী আব্দুল করিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন,‘২০০ টাকার ভাড়া এখন ৪০০ টাকা। কষ্ট করে দু’পয়সা কামাই করি। বাড়তি ভাড়া দিতে মন টানে না। ঈদে বাড়ি ফিরতে হবে। তাই কম টাকায় ছাদে করে যাচ্ছি। যদিও ছাদে ঝুঁকি আছে। তারপরও সর্তকতার সঙ্গে বসে থাকব। ’

কাঁঠালবাড়ী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, দূরপাল্লার বিভিন্ন পরিবহনের ছাদে যাত্রীরা বসে আছে। খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, টেকেরহাট, ভাঙ্গাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গার অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষেরা গাড়ির ছাদে চরে রওনা হয়েছেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। এসব স্থানের দূরত্ব ভেদে বাসের ছাদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আদায় করছে পরিবহনগুলো। তবে সকাল থেকে গাড়ির ভেতরে ভাড়া আদায় করছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা করে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা যায়, মাঝ পদ্মায় ঢেউ থাকলেও নৌযান চলাচলে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। রাত পোহালেই ঈদ। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই যাত্রীদের ঢল নেমেছে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে। ৮৬টি লঞ্চ, ১৭টি ফেরি ও দুই শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে রুটে।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে ঘাট এলাকায় তিন শতাধিক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।

সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) সোনাহর আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঘাটে পর্যাপ্ত পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। লঞ্চ, স্পিডবোট, ফেরিঘাট ও পরিবহন টার্মিনালে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।