ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মহাসড়কে মহাজট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
মহাসড়কে মহাজট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে

ঢাকা: রাত পোহালেই ঈদ। তাই শেষ মুহুর্তে রাজধানী ছেড়ে প্রিয়জনের টানে বাড়ির দিকে ছুটছে মানুষ। বাসের ছাদে, ট্রাকে, পিকআপভ্যানে, লোকাল বাস কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

দেশের উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গগামী সব ধরনের রুটের বাসের গন্তব্য গাবতলী বাস টার্মিনাল। সেখানে এখন শুধু ঘরমুখো মানুষে ভিড়।

কেউ ভোর থেকে অপেক্ষা করছেন, কেউবা আবার রাত থেকেই গাতলীতে অপেক্ষায় আছেন। কোনো পরিবহনই সময়মতো ছেড়ে যেতে পারছে না। শিডিউলের চার, পাঁচঘণ্টা পরেও দেখা মিলছে না কাঙ্খিত বাসের। অপেক্ষার সময় যেন পার হচ্ছে না। অনেকে বাচ্চা নিয়ে ভ্যাপসা গরমে অস্থির। তারপরেও বাড়ি যাওয়ার অপেক্ষায় যাত্রীরা। পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও বাস আসার সঙ্গে সঙ্গে সব গ্লানি মুখে চোখে মুখে স্বস্তির ভাব ফুটে উঠছে।

মাগুরা-ঝিনাইদহ-কালিগঞ্জ রুটের জে লাইন বাস কাউন্টারে ভোর পাঁচটা থেকে অপেক্ষা করছেন রোকসানা পারভিন।

তার কাছে বাসের সময় জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, টিকিটের সময় বলে কি করব? কখন আসবে সেই অপেক্ষায় আছি। আমাদের বাস ছাড়ার কথা ছিল সাড়ে ৫টায়, এখন সাড়ে ১২টা বাজে বাসের দেখা নেই। কাউন্টার থেকে বলছে বাস নাকি মাজার রোডে আছে। আসলে কখন আসবে কেউ বলে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।  ছবি: বাংলানিউজবাসের এই শিডিউল বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মির্জা এরফান বাংলানিউজকে বলেন, বাস টাইমে ছাড়ব কিভাবে? রাত ১২টার সময় আমাদের যে বাসটি ছেড়ে গেছে। একটু আগে খোঁজ নিয়েছি মাত্র মানিকগঞ্জ গেছে। তাহলে কিভাবে সেই বাস আসবে পরের ট্রিপের জন্য? এই বাস ফিরে না আসা পর্যন্ত তো আরেক ট্রিপ ধরতে পারবে না।

তিনি বলেন, মহাসড়কে প্রত্যেক জায়গায় তীব্র যানজট। কোনো গাড়িই ঠিকমত যেতে পারছে না। রাস্তার পাশে পশুর হাট থাকায় যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

সাউদিয়া পরিবহনের যাত্রী মমিন শিকদার বাংলানিউজকে মোবাইল ফোনে জানান, ভোর পাঁচটায় গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়লেও দুপুর সাড়ে ১২ টায় মাত্র নবীনগর পার হয়েছে। এই বাস কখন পাটুরিয়া পৌঁছাবে তার কোনো ঠিক নেই।

এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। অন্যদিকে যারা এখনো বাসের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি তাদের জন্য আরও ভোগান্তি অপেক্ষা করছে। কাউন্টারে কাউন্টারে দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো বাসের সিট ফাঁকা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড়।  ছবি: বাংলানিউজঝিনাইদহ যাওয়ার জন্য সকাল ১০টা ২৫ থেকে অপেক্ষা করছেন সাঈদ আহসান। তিনি বাংলানিউজকে জানান, আমি জে লাইনের এসি বাসের টিকিট নিয়েছি। শিডিউল অনুযায়ী সাড়ে ১০টায় ছাড়ার কথা ছিল। এখন ১২ টা ৫০ বাজে কখন ছাড়বে কিছু বলতে পারছে না। একটু আগে কাউন্টারে খোঁজ নিয়েছে ওরা জানালো বাসটি মাজার রোডে রিপেয়ারিং করছে। আসলে তো ওদের কথার কোনো ঠিক নাই। আগেও কয়েকবার বলছে আমিনবাজারে আছে, গাবতলী ঢুকছে, আসলে কখন ছাড়বে বাসে উঠেই বলতে পারব। তারপরেও যদি বাড়িতে যেতে পারি ভাল লাগবে।

রাস্তার যানজটের কথা স্বীকার করে সোহাগ পরিবহনের গাবতলী শাখার ম্যানেজার বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। কোনো গাড়িই শিডিউল অনুযায়ী ছাড়তে পারছি না। কমপক্ষে ৫-৬ ঘণ্টার শিডিউল বিপর্যয়। আশাকরি আজ সন্ধ্যার পর থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
এসএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।