ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির মাধ্যমে বিএনপির উত্থান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির মাধ্যমে বিএনপির উত্থান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি: পিআইডি

ঢাকা: ‘হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির মধ্য দিয়ে উত্থান’ হওয়া বিএনপি কখনো দেশের কল্যাণ করতে পারে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৪ বছর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচিতে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় যে ‘জিয়া পরিবার জড়িত ছিল’, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সেই হামলাস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক স্মরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ অগাস্টে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে বিএনপি-জামায়াত জোট ওই গ্রেনেড হামলা চালায়।



শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে এরকম একটি ঘটনা ক্ষমতায় থেকে বিএনপি-জামায়াত জোটই ঘটিয়েছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

২১ আগস্টের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রকাশ্যে এরকম হামলার ঘটনা ঘটার কোনো দৃষ্টান্ত আমার মনে হয় নেই। … সেদিন হামলাকারীরা যেভাবে এখানে এসে হামলা করল, স্বাভাবিকভাবেই সবাই বুঝতে পারল, কারা এর পেছনে রয়েছে।

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা বলেছিলেন, ১৫ অগাস্ট যেভাবে আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে, আমি নাকি সেই একই পথে যাব। খালেদা জিয়া আরেকটা বক্তৃতায় আমার নাম নিয়ে বলেছিলেন, ‘হাসিনা সে প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। ’

‘এবং তার পরেই কিন্তু ওই হামলা। খুব স্বাভাবিকভাবে যে কোনো মানুষের কাছে এটা উপলব্ধি হবে, আমাকে তো মারবেই মারবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে, যাতে আওয়ামী লীগ আর শত বছরেও ক্ষমতায় যেতে না পারে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২১ অগাস্টের ঘটনায় জিয়া পরিবার যে জড়িত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওইরকম একটি হামলার পর আলামত সংগ্রহ করার নিয়ম থাকলেও তখনকার সরকার আর পুলিশ লিপ্ত হয়েছিল আলামত নষ্ট করার কাজে। হামলায় আহতদের সাহায্য করতে আওয়ামী লীগের অন্য নেতাকর্মীরা যখন ছুটে গেলেন, তখন পুলিশ তাদের ওপর টিয়ার শেল ছোড়ে।

২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলারর প্রকৃত খুনিদের আড়াল করে বিএনপি সরকার ‘জজ মিয়া নাটক’ সাজিয়ে জাতীয়-আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকে ‘অন্য দিকে ঘুরাতে’ চেষ্টা করেছিল বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

‘গুজব ছড়ানো বা মিথ্যা কথা বলায় বিএনপির চেয়ে পারদর্শী আর কেউ নাই। তারা সব দিকে ছড়াল, স্কুলের বাচ্চাদের কাছে বলল, আমি নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে এসে মেরেছি। মানে আমি নিজে নিজে আত্মহত্যা করতে এসেছি!’

ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে একুশে অগাস্টে হতাহতদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বিএনপির সরকার বাধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।

গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দোষীদের বিচার না করে বিএনপি সরকার তাদের পদোন্নতি দিয়ে ‘পুরস্কৃত’ করেছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।  

তিনি বলেন, তাদের দুঃখ ছিল, আমি কেন মরলাম না। খবর নেওয়ার চেষ্টা করছিল। জানি না তাদের কি ইচ্ছা। বাংলাদেশের মাটিতে ফেরার পর থেকেই যত বার যেখানে গিয়েছি, ততবারই এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আল্লাহ আমাকে প্রতিবার বাঁচিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ‘১৯টি ক্যু’র মাধ্যমে বাংলাদেশ এক ‘রক্তাক্ত জনপদে’ পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল ‘জঙ্গি-সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য’। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে তা বন্ধ করতে চেষ্টা করেছে।

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারে, আগুন দিয়ে মানুষ মারতে পারে, নারী ও শিশু হত্যা করতে পারে; যারা প্রকাশ্য দিবালোকে বিরোধী দলের র‌্যালিতে গ্রেনেড হামলা করতে পারে, তারা কখনো কোনো দেশের কল্যাণ ও মঙ্গল করতে পারে না। … এরা কেবল রক্ত নিতে জানে।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত জোটের কেউ যাতে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি যত দিন বেঁচে থাকবেন ততো দিন দেশকে উন্নত করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন।

ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সব রকমের সুযোগ করে দিতে, যেন ঈদের খুশি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।