ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ট্রেনের ছাদ-ইঞ্জিন-বগি, বাদ নেই কিছুই!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৮
ট্রেনের ছাদ-ইঞ্জিন-বগি, বাদ নেই কিছুই! বিমানবন্দর রেলস্টেশনের উপচেপড়া ভিড় | ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: যাত্রীবাহী ট্রেনের ছাদ দেখার কোনো উপায়ই নেই। থাকবে কী করে! ছাদের উপর চড়ে বসেছেন হাজারো মানুষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে ট্রেনের ছাদে উঠে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের দিকে।

রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেনের ছাদে উঠতে নিষেধ করলেও বাধা দিচ্ছে না। তাদের মতে, বিপুল পরিমাণ জনসমুদ্রের বিপক্ষে অল্পসংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য দিয়ে ঈদযাত্রায় ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ ঠেকানো অসম্ভব কাজ।

তবে ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে রেলওয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের।

সোমবার (২০ আগস্ট) বিমানবন্দর রেলস্টেশনে দেখা গিয়ে দেখা যায় কমলাপুর রেলস্টেশন থেকেই ট্রেনের ছাদ, ইঞ্জিন ও বগি সব পরিপূর্ণ হয়ে আসছে। বিমানবন্দর স্টেশনে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা কাঙ্ক্ষিত ট্রেনে হুড়োহুড়ি করে কেউ কেউ উঠতে পারছেন। যারা পারছেন না তারা অনন্যোপায় হয়ে ছুটছেন বিকল্প উপায়ের সন্ধানে।
ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে চড়ছেন ঘরমুকো মানুষ | ছবি: রাজীন চৌধুরীট্রেনের ছাদে চড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল প্রসঙ্গে অপেক্ষমান যাত্রীরা বাংলানিউজ জানান, বাসেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে সেই সঙ্গে রয়েছে তীব্র যানজটের আশঙ্কা। অপরদিকে ট্রেনের ছাদে ঝুঁকি ছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই, ভাড়াও কম।  

সোমবার শেষ কর্মদিবস হওয়ায় অফিস শেষে নাড়ির টানে রওনা দিয়েছেন রাজধানীবাসী। এ কারণে সোমবার সকালের তুলনায় বিকেলে যাত্রীর চাপ বেশি। আর ট্রেনের ভাড়াও সাশ্রয়ী হওয়ায় ট্রেনে তুলনামূলক চাপ বেশি পড়ে বলে জানান রেলওয়েও কর্মকর্তারা।  

বিমানবন্দর স্টেশনে সিরাজগঞ্জগামী আন্তঃনগর ট্রেনের ছাদে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন মিরপুর এলাকার এক গার্মেন্ট শ্রমিক রাব্বি। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, অন্যবার উপরে ওঠার জন্য মই থাকে। এবার নাই। পুলিশ রাখতে দেয় নাই। তাই নিচে থাকা মানুষদের ওপর ভর করে বা বিভিন্নভাবে ঝুলে উপরে উঠছে যাত্রীরা। আমি অর্ধেক উঠে দেখি জায়গা নাই তাই নেমে গেছি।

ছাদে চড়া বেশিরভাগ যাত্রীর মতো রাব্বিও টিকিট কাটেননি বলে জানান। অথচ রেলস্টেশনে ঢুকতেই টিকিট চেক করছেন আনসার সদস্যরা। আনসারদের ভাষ্যমতে, স্টেশনের গেট নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও স্টেশনের দুই দিক দিয়ে অর্থাৎ ট্রেন যেদিক দিয়ে স্টেশনে ঢুকছে সেদিক দিয়ে তো চেকিং করা সম্ভব না।  

ট্রেনের ছাদে ওঠার বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) পূর্বের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মাইকিং করে ছাদে উঠতে মানা করছি। কিন্তু এত লোকের ভিড়ে এত অল্পসংখ্যক পুলিশ দিয়ে এটা রোধ করা কঠিন ও অমানবিক কাজ। তবুও আমরা মই আনতে দিচ্ছি না। তাতেও কিছুটা কমছে। আর ঈদে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ তাই বাধা দিলে যাত্রীদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই আমরা ছাদে থাকা মানুষদের সচেতন করার কাজ চালাচ্ছি এবং ছাদে জায়গা না থাকলে উঠতে বাধা দিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৮
এমএএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।