ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নৃত্যগুরু বজলুর রহমান বাদল আর নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নৃত্যগুরু বজলুর রহমান বাদল আর নেই বজলার রহমান বাদল

রাজশাহী: স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নৃত্যগুরু বজলুর রহমান বাদল আর নেই (ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯৫ বছর। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

রোববার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তা ঘোষণা করা হয়।

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।  বাদ এশা শিরোইল জামে মসজিদে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পরে টিকাপাড়া গোরস্থানে দাফন করা হবে।

শুক্রবার (১৭ আগস্ট) দিনগত রাতে হাসপাতালে ভর্তির পর রোববার (১৯ আগস্ট) সকালে ১১টার দিকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছিল।  

আইসিইউতে স্থানান্তর করা হলো নৃত্যগুরু বাদলকে

রামেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. রইস উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বজলুর রহমান বাদলের হৃদযন্ত্রে তেমন সমস্যা নেই। তবে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট ছিল। তার চিকিৎসায় শনিবার (১৮ আগস্ট) রামেকের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সমীর মজুমদারকে প্রধান করে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তিনি নিজেও এ বোর্ডের সদস্য। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য বাদলকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের পরামর্শ গ্রহণ করে।

বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের কারণে গত শুক্রবার দিনগত রাত পৌনে ২টার দিকে বাদলকে রামেক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শনিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে তার একটি শয্যাও জোটেনি।  

খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এনিয়ে হস্তক্ষেপ করেন নব-নির্বাচিত সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তৎপর হয় জেলা প্রশাসনও। পরে বাদলকে একটি শয্যায় তোলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ডও।

লিটনের হস্তক্ষেপে শয্যা পেলেন নৃত্যগুরু বাদল

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গেল বছর স্বাধীনতা পদক পান ৯৫ বছর বয়সী নৃত্যশিল্পী বজলুর রহমান বাদল। শিল্পকলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার, নজরুল অ্যাকাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন ‘নৃত্যগুরু’ উপাধি। এছাড়া বহু সংবর্ধনা এবং সম্মাননা পেয়েছেন।

বজলুর রহমান ১৯২৩ সালের ১৮ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষরা কলকাতার মানুষ ছিলেন। দাদা আশাক হোসেন আমের ব্যবসা করতে এসে মালদহে বাড়ি করেছিলেন। সেখানেই তার জন্ম। বাবার নাম আবুল কাশেম। মায়ের নাম সখিনা বিবি।

১৯৪৫ সালে মালদহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরের বছর নাটক করতে রাজশাহী আসেন। আর ফেরা হয়নি। গত একমাস ধরে বার্ধক্যজনিক বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মহানগরীর শিরোইলের নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন নৃত্যগুরু বজলুর রহমান বাদল। অবস্থার অবনতি ঘটলে শুক্রবার গভীর রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮/ আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা
এসএস/এএটি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।