ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে নড়িয়া উপজেলা শহর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে নড়িয়া উপজেলা শহর পদ্মায় বিলীন হয়ে যাওয়ার সড়ক। ছবি: বাংলানিউজ

শরীয়তপুর: নতুন করে আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে সর্বনাশা পদ্মা। একের পর এক গিলে খাচ্ছে নড়িয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ, ঘরবাড়ি, গাছ-পালা, রাস্তাঘাটসহ অসংখ্য স্থাপনা। পদ্মার আগ্রাসী থাবায় এখন বিলীন হতে চলেছে নড়িয়া উপজেলা শহর। 

শনিবার (১৮ আগস্ট) রাতে মুলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন গাজী কালুর মেহমানখানা নামে ৫ তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল একটি বাড়ি, খান বাড়ি জামে মসজিদ ও দিলু খাঁর দ্বিতল পাকা বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়।

এছাড়া শনিবার দুপুর থেকে এ পর্যন্ত নড়িয়া-মুলফৎগঞ্জ সড়কের বাঁশতলা, পুর্ব নড়িয়া স্কুল সংলগ্ন ও গাজীকালুর বাড়ীর সংলগ্ন পয়েন্টে প্রায় ২শ’ মিটার সড়ক পদ্মায় বিলীন হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এখন নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মূলফৎগঞ্জ বাজারের দারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে পদ্মা। যে কোনো মুহূর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে উপজেলা হাসপাতাল ও মুলফৎগঞ্জ বাজারটি। এতে আতঙ্কিত হয়ে বিভিন্ন স্থাপনা ও মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন পদ্মাপাড়ের মানুষ।

এছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে নড়িয়া উপজেলা শহর, নড়িয়া পৌরবাজার, পৌর ভবন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নড়িয়া সরকারি খাদ্য গুদাম, নড়িয়া সরকারি কলেজ, নড়িয়া বিএল উচ্চ বিদ্যালয়, নড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুলফৎগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসাসহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পুরনো ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে বাড়ি।  ছবি: বাংলানিউজ

গত ৭ আগস্ট দুপুরে হঠাৎ করে নড়িয়ার সাধুরবাজার লঞ্চঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা ধসে গিয়ে কয়েকটি যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ৩০ জন লোক নদীতে তলিয়ে যায়। এদের মধ্যে নিখোঁজ হয় ৯ জন। নিখোঁজের ৭ দিন পর চাঁদপুর সীমান্ত এলাকা থেকে ২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের এখনও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পদ্মার ভাঙন থেকে নড়িয়া শহরকে বাঁচাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য তাৎক্ষণিক ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ১১ জুলাই থেকে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে নড়িয়ার ভাঙন কবলিত বিভিন্ন এলাকায়।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পদ্মার ভাঙন থেকে নড়িয়া শহরকে বাঁচাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। গত ১১ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ১ লাখ ব্যাগ নদীতে ফেলেছি। যে এলাকায় ব্যাগ ফেলা হয়েছে সে এলাকা দিয়ে ভাঙন কমেছে। যে এলাকায় বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে সেখানেও বালু ভর্তি ব্যাগ ফেলা হবে।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা ইয়াসমিন বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার দুপুর থেকে নড়িয়া-মুলফৎগঞ্জ সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে নড়িয়া-মুলফৎগঞ্জ সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এছাড়া রাত ৯টার দিকে মুলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন গাজী কালুর মেহমান খানা নামে বিলাসবহুল বহুতল ভবনসহ একটি মসজিদ ও আরো কিছু স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে নড়িয়া উপজেলা শহর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ