রোববার (১৯ আগস্ট) রাজশাহী রেলস্টেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই হিড়িক পড়েছে ঘরমুখো মানুষের। রেলস্টেশন যেন জনসমুদ্র।
আবার নির্ধারিত সময়ের দেড় থেকে দু’ঘণ্টা দেরিতে রাজশাহী পৌঁছাচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ট্রেন। এতে ঈদ যাত্রার তৃতীয় দিনে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঘরমুখো হাজারও মানুষ। ট্রেন দেরিতে ছাড়ায় ক্ষোভও প্রকাশ করেন যাত্রীরা।
স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছেন, যাত্রীদের বাড়তি চাপের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে কমানো হয়েছে ট্রেনের গতি। ফলে ট্রেন দেরিতে স্টেশনে পৌঁছাচ্ছে। যে কারণে আবার দেরি করে ছাড়ছে ট্রেন। এতে প্রায় প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনই এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে চলছে। বিশেষ করে গত তিনদিন থেকে এ অবস্থায় পশ্চিমাঞ্চলের সব ট্রেন চলছে।
রাজশাহী রেলস্টেশন মাস্টার জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার (১৮ আগস্ট) ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সকাল ৭টা ২০মিনিটে। কিন্তু ট্রেনটি রাজশাহী ছেড়ে যায় সকাল সাড়ে ৮টায়। আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা’র ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল বিকেল ৪টায়। কিন্তু ছেড়ে যায় সাড়ে ৫টায়। রোববার সকালেও দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে সিল্কসিটি।
এছাড়া শনিবার (১৮ আগস্ট) রাতে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন ধূমকেতু ছাড়ার নির্দিষ্ট সময় ছিল রাতে ১১টা ২০মিনিট। কিন্তু ট্রেনটি রাজশাহী ছেড়ে গেছে রাত পৌনে ১টায়। গত তিনদিন থেকে এভাবেই এক থেক দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে ছেড়ে যাচ্ছে রাজশাহী-ঢাকা রুটের বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেন। একইভাবে ঢাকা থেকে রাজশাহী আসা ট্রেনগুলোও পৌঁছাচ্ছে দেরিতে। এর মধ্যে রোববার (১৯ আগস্ট) দিনের প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন রাজশাহী অভিমুখী ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় কমলাপুর ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়ে গেছে ৭টার পর।
রোববার রাজশাহী স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় যাত্রীরা লাগেজ নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটের ট্রেনের জন্যে অপেক্ষা করছেন। রাজশাহী রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ট্রেন না ঢোকা পর্যন্ত যাত্রীরা জানতে পারছেন না তাদের গন্তব্যের ট্রেনটি ঠিক কখন এসে পৌঁছাবে আর কখন ছাড়বে। এ নিয়ে যাত্রীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ।
রাজশাহী স্টেশনে অপেক্ষারত আজম আলী নামে এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ঈদকে সামনে রেখে মানুষ এখন ঘরমুখো। সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে এই ঘরমুখো মানুষদের প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে ট্রেন যাত্রা। তবে প্রতি বারের মতো এবারও ঘটেছে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়। ফলে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ ও অনিশ্চয়তা মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিন্টেন্ডেন্ট গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনাকরে এবং দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিটি ট্রেনের গতি কমানো হয়েছে। প্রতিবছর এ সময়ে ট্রেনের ভেতরে যেমন যাত্রীতে ঠাসা থাকে।
তেমনি টিকিট না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক মানুষ ট্রেনের ছাদে ওঠেন। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তাই কম গতি নিয়েই ট্রেন চালাতে হয় চালকদের। ফলে সময়ের হেরফের হয় এবং শিডিউল বিপর্যয় হয়।
শিডিউল বিপর্যয় প্রশ্নে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিহির কান্তি গুহ বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত ঈদের আগে এমন সমস্যা দেখা যায়। এরপরও শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে ধীরে ধীরে সব রুটে ট্রেন চলাচল আবারও স্বাভাবিক হবে। সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
এসএস/ এএইচ/এএটি