জাহিদুজ্জামানের অনেক অনুরোধের পর কাউন্টার থেকে একটি বাসের পেছনের সারির একটি টিকিট ম্যানেজ করে দেওয়া হলো। কিন্তু তাতে বউ যাবেন, না-কি তিনি! এই সংকুল অবস্থায় শেষপর্যন্ত তিনি টাকাই ফেরত নিয়ে নিলেন।
আরেক যাত্রী হাসানুজ্জামানের গাড়ি ছিল বিকেল ৫টায়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাত ১০টা বাজে বাসের কোনো খবর নেই। কখন আসবে তাও জানি না।
গাবতলী বাস স্ট্যান্ডের দক্ষিণবঙ্গ-উত্তরঙ্গগামী যাত্রীদের এখন এই অবস্থায় রাত পার করতে হচ্ছে। পরিবহনগুলো বলছে, মহাসড়কে ধীর গতি আর যানজট। কিছু করার নেই। কোরবানির পশু বোঝাই গাড়ির কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
পূর্বাশার সুপারভাইজার মুন্নু বাংলানিউজকে বলেন, ফেরি পারাপারে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। গতরাত ৩টায় আমার গাড়ি ফেরিতে ওঠার লাইনে ছিল। কিছুক্ষণ হলো গাবতলী আইলাম। ব্যাপক জ্যাম। আমাদের কোনো দোষ নেই।
তবে সোহাগসহ কিছু পরিবহনের গাড়ির যাত্রীদের তেমন সমস্যা হচ্ছে না। তারা ভিআইপি লাইন ধরে ফেরিতে পদ্মা পার হচ্ছে। ফলে আধা ঘণ্টার বেশি এসব পরিবহনের যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বেশি ট্রিপ নিইনি। পর্যাপ্ত গাড়ি আছে। আর ফেরিতে ভিআইপি লাইন নিচ্ছি। ফলে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু যারা নিজের গাড়ি ছাড়া অন্যের গাড়ি এনে বেশি টিকিট বিক্রি করেছে, তাদেরই ঝামেলা হচ্ছে। কেননা আপ ট্রিপ যেয়ে ডাউন ট্রিপে। এরপর আর সময় মতো আসতে পারছে না।
এদিকে, বাসের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে নারী-শিশু ও বয়স্কদের।
মামুন মিয়া নামে এক যাত্রী তার কোলের শিশুকে নিয়ে নানা কায়দা করছেন। কিন্তু গরমে অতিষ্ঠ বাচ্চার কান্না থামাতে পারছেন না। বলেন, এভাবে কি হয়! সেই বিকেল ৫টা থেকে বসে আছি। এই ভোগান্তির শেষ কখন?
আরেক যাত্রী আব্দুল জব্বার বিপদে পড়েছেন ডায়বেটিকসের রোগী মা জাহানারা বেগমের বেগতিক অবস্থার কারণে। বলছেন, ঈদে আর বাড়িতেই যাওয়া যাবে না। তার গ্রামের বাড়ি যশোরে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
ইইউডি/টিএ