জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান শনিবার ( ১৮ আগস্ট) মৃত্যুবরণ করেছেন। আনান কমিশনের মধ্যে দিয়ে গত দুই বছর ধরে তিনি বেশি আলোচিত ছিলেন।
আনান কমিশনের প্রতিবেদনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের ফেরত নেয়ার কথাও বলা হয়েছিলে। আনান কমিশনের সুপারিশ যেদিন মিয়ানমারের সরকারের কাছে জমা দেয়া হয়, সেদিনই রাখাইনে রাজ্যে হামলা ও সহিংসতা শুরু হয়। তারপর থেকেই নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে পরবর্তীতে আরো দু’টি কমিশন গঠন করে মিয়ানমার সরকার।
আন্তর্জাতিক সম্প্রাদয় সব সময়েই আনান কমিশন বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে মিয়ানমার সরকার সেই কমিশনের সুপারিশ এখনো বাস্তবায়ন করেনি। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কফি আনান নিজেও বরাবর সোচ্চার ছিলেন। গত বছর অক্টোবরে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের এক বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন কফি আনান। সে সময় তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। এছাড়া মিয়ানমারের আইন সংশোধন করে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিক স্বীকৃতি দেওয়ার ওপরও জোর দিয়েছিলেন তিনি।
রাখাইন প্রদেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ মিয়ানমার সরকার বাস্তবায়ন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন কফি আনান।
মিয়ানমারের নেত্রী সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। তবে সেই সুপারিশ এখনো বাস্তবায়ন করেনি মিয়ানমার সরকার।
জাতিসংঘের সাবেক এ মহাসচিব আশা প্রকাশ করেছিলেন, রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত নিয়ে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে পুনর্বাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এছাড়া মিয়ানমারের আন্তঃসম্প্রদায়ের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি। কফি আনান মৃত্যুবরণ করায় রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে আর কখনো তার কণ্ঠ শোনা যাবে না। তবে তার কণ্ঠ শোনা না গেলেও কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানাবেন বিশ্ব নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
টিআর/এসএইচ