ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদ ঘিরে ২ সপ্তাহের বিশেষ নিরাপত্তা র‌্যাবের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
ঈদ ঘিরে ২ সপ্তাহের বিশেষ নিরাপত্তা র‌্যাবের ঈদ ঘিরে বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানান র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ

ঢাকা: আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আগে ও পরে দুই সপ্তাহের নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

জনসাধারণের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে র‌্যাবের ফেসবুক পেজে দেশব্যাপী সব সড়কের নিয়মিত আপডেট দেওয়া হবে। রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সবাইকে এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বানও জানান তিনি।

শনিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব ডিজি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ঈদুল আজহার দিন, আগে ও পরে দেশজুড়ে ২ সপ্তাহের নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে র‌্যাব। দেশজুড়ে র‌্যাবের ২৪৫টি পেট্রোল টিম কাজ করবে এবং ৫৬টি স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।

ঈদে কোটি কোটি মানুষ ঢাকা ছেড়ে যাবে এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করবে। মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর এক্সিট পয়েন্টগুলোতে ২০টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ও গোমতী সেতুতে কাঠামোগত সমস্যার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। সে কারণে এই দু’টি এলাকাতেও র‌্যাবের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকবে। হাইওয়ে ও লোকাল পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে র‌্যাব কাজ করছে। লক্ষ্য ঘরমুখো মানুষকে সহযোগিতা করা, বলেন র‌্যাব ডিজি।

এ সময় গুগল ম্যাপের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সড়কের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বেনজীর আহমেদ বলেন, কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া এবং দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে চাপ থাকলেও এখন পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। নাব্যতা সংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া রুটে শুক্রবার ৯টি ফেরি চলাচল করলেও আজ ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। তারপরেও আমরা দু’টি ফেরিঘাটেই গরুর ট্রাকগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে ফেরি পারাপারে সহায়তা করছি।

নৌপথ এবং রেলপথে ঈদযাত্রা এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সবাই নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন এমন প্রত্যাশা করে র‌্যাব ডিজি বলেন, র‌্যাব হেডকোয়ার্টারের ফেসবুক পেজে ৪ ঘণ্টা পরপর সারাদেশের সবপথের অবস্থার আপডেট দেওয়া হবে। ১৪ ব্যাটালিয়নের ফেসবুক পেজেও তাদের আওতাভুক্ত এলাকার আপডেট দেবে। প্রয়োজন মনে করলে জনসাধারণ আপডেট দেখে বের হতে পারেন। সব পথের অবস্থা জেনে সবাই সেই সুযোগ নেবেন।

পশুর হাটের বেচা-কেনা জমে উঠতে শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বড় বড় বাজারগুলোতে র‌্যাবের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকবে। যেসব বাজারে ক্যাম্প নেই সেখানে র‌্যাবের পেট্রোল টিম থাকবে। অজ্ঞানপার্টি-মলমপার্টির দৌরাত্ম্যরোধে র‌্যাব তৎপর রয়েছে।

ঈদ জামাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দিনাজপুর ও শোলাকিয়ায় দু’টি বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া রাজধানীতে প্রধান জামাতসহ অন্যান্য ঈদ জামাতে র‌্যাবের নজরদারি থাকবে।

মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ঈদে সড়কে ১৩৭ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। অযথা এসব প্রাণহানীর কোন কারণ হয়না। সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ২৩, ২৪ ও ২৫ আগস্ট সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহাসড়কে বিশেষ টহল ও চেকপোস্ট থাকবে। যানবাহনের ওভারস্পিডিং নিয়ন্ত্রণ লাইসেন্সবিহীন চালকদের নজরদারি করা হবে। ঈদের সময় হেলপারের হাতে গাড়ি না দিতে মালিকদের আহ্বান জানান এবং খোলা ট্রাকে যাত্রী না তুলতে চালকদের ও যাত্রী না হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এবার ফিটনেস জটিলতায় প্রচুর গাড়ি অফরুট রয়েছে। তবে এ কারণে সড়কপথে কোন চাপ পড়তে দেখা যায়নি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাভাবিক মুভমেন্ট নিশ্চিত করার আশা প্রকাশ করেন র‌্যাব ডিজি।

মাদকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রাখার কথা মনে করিয়ে দিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, অনেকে গডফাদার গডফাদার করছেন। কিন্তু এমন সব ব্যক্তিকে দুই-আড়াইলাখ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হচ্ছে তাদেরকে কেউ চিনেও না। ঈদের সময় মাদক পাচার বাড়তে পারে, সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি থাকবে। এছাড়া কারো কাছে এ বিষয়ে তথ্য থাকলে আমাদের জানাবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা একটি চলমান বিষয়। তালিকার বাইরেও আমরা ব্যবসায়ীদের পাচ্ছি, তবে এ বিষয়ে বিস্ময়ের কিছু নেই। তালিকা প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করা হচ্ছে।

ঈদ উপলক্ষে ‘থ্রেট’ না থাকলেও সব ধরনের থ্রেটের বিষয় আমাদের মাথায় রয়েছে। আন্ডারগ্রাউন্ড বা সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর প্রতি গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।

র‌্যাব কখনো জঙ্গিদের থেকে দৃষ্টি সরাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জঙ্গি সংগঠনের পুনরুত্থান পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না। যেন উত্থান না হয় সেজন্য কাজ করতে হবে। আমরা সার্বক্ষণিক এ অপপ্রয়াসরোধে কাজ করছি।

র‌্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়নে অ্যান্টি টেরোরিজমের বিশেষ ইউনিট ছিলো। কিন্তু এখন মাদকের জন্য একটি এবং সাইবার পেট্রোলিংয়ের জন্য আরো দু’টি বিশেষ ইউনিট কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

কক্সবাজারের কাউন্সিলর একরামুল নিহতের বিষয়ে জানতে চাইলে বেনজীর আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী তদন্তের আগ পর্যন্ত মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।