ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঘরে ফেরার ব্যস্ততা কাঁঠালবাড়ী ঘাটে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
ঘরে ফেরার ব্যস্ততা কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: তিনদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। শিকড়ের টান উপক্ষো করা কঠিন। তাই তো পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের অন্যতম নৌরুট হচ্ছে মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুট। সারা বছরের ব্যস্ততম এই নৌরুটে ঈদ মৌসুমে ব্যস্ততা বেড়ে যায় আরো কয়েকগুণ।

লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে করে প্রমত্ত পদ্মা পারি দিতে হয় যাত্রীদের।  

শনিবার (১৮ আগস্ট) সকাল থেকেই তাই ঘরে ফেরার ব্যস্ততা দেখা গেছে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে।

বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ‘ঈদকে সামনে রেখে শনিবার সকাল থেকেই ব্যস্ত হয়ে উঠেছে কাঁঠালবাড়ী ঘাট। লঞ্চ-স্পিডবোটে করে যাত্রীরা শিমুলিয়া থেকে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে এসে নামছে। সকাল থেকেই পদ্মা শান্ত থাকায় লঞ্চে যাত্রীদের ভীড় বেশি। নৌরুটে ৮৬টি লঞ্চ ও ২ শতাধিক স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করছে।

বরিশালের যাত্রী মো. সুমন বলেন, সকালের দিকে ভিড় কম থাকে ভেবে রওনা হয়েছি। কিন্ত এখন দেখি তার উল্টো। সকাল থেকেই যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা যাচ্ছে। ঈদের সময়টায় বাড়ি ফিরতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। তবে বাড়ি ফিরতে পারছি এটাই বড় কথা।

গোপালগঞ্জের যাত্রী সোহলে হাওলাদার বলেন, লঞ্চঘাটে প্রচণ্ড ভিড়। বাড়ি ফিরতে হবে। যানবাহনে নিজের জায়গা করে নেওয়ার প্রতিযোগিতা এখন সব জায়গায়। লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই শিমুলিয়া ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। তবে পদ্মা শান্ত থাকায় তেমন সমস্যা হচ্ছে না।

এদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র নাব্যতা সংকটের কবলে রয়েছে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটটি। নৌরুটের লৌহজং চ্যানেলমুখে নাব্যতা সংকট থাকায় গত সপ্তাহ থেকে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রো রোসহ বন্ধ রয়েছে ১০টি ফেরি। কে-টাইপ ও মিডিয়ামসহ ছোট ৯টি ফেরি সকাল থেকে চলাচল করছে। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় পরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ঘরে ফেরার এই যাত্রায় দীর্ঘ সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের চাপ তুলনামূলকভাবে বেশি পড়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোটে। শিমুলিয়া ঘাট থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রীরা গাড়ি রেখে স্পিডবোট বা লঞ্চে পার হয়ে আসছেন কাঁঠালবাড়ী ঘাটে। যাত্রীশূন্য গাড়িগুলো পরে ফেরিতে পার করে আনছেন চালকেরা।

রাশেদুজ্জামান খান নামের এক যাত্রী বলেন, ফেরি ঘাটে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। ফেরিতে করে পার হতে অনেকক্ষণ ঘাটে অপেক্ষা করতে হবে। তাই স্পিডবোটে করে পার হয়ে এলাম। ড্রাইভার পরে গাড়ি নিয়ে আসবে।

বিআইডব্লিউটিএ’র মেরিন কর্মকর্তা আহমদ আলী বলেন, নাব্যতা সংকট নিরসন করতে চ্যানেলমুখে খননকাজ অব্যাহত রয়েছে। বিকেল পর্যন্ত ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, এখনো ছোট ৯টি ফেরি চলাচল করছে। গতকাল পরীক্ষামূলকভাবে কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে একটি রো রো ফেরি শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে শিমুলিয়া থেকে ফেরিটি কাঁঠালবাড়ী ঘাটে আসতে পারেনি। আশা করা যায় আগামীকাল পর্যন্ত সকল ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে।

বিআইডব্লিউটিএ’র কাঁঠালবাড়ী লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আক্তার হোসেন বলেন, সকাল থেকেই ঘাটে যাত্রীদের ভীড় রয়েছে। কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ঢাকাগামী তেমন যাত্রী নেই। তবে শিমুলিয়া ঘাট থেকে লঞ্চ বোঝাই করে যাত্রীরা আসছেন। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় লঞ্চে যাত্রীদের চাপ বেশি। লঞ্চঘাটে যাতে করে যাত্রীদের ভোগান্তি না হয় সেদিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি রেখেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।