ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ছাগলনাইয়ায় মহিষের দখলে পশুরহাট

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
ছাগলনাইয়ায় মহিষের দখলে পশুরহাট পশুরহাট। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফেনীর ছাগলনাইয়ার পশুরহাটগুলোতে গরু-ছাগলের চেয়ে মহিষ ছিল বেশি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গরু-ছাগলের পাশাপাশি মহিষের চাহিদাও কম নয় এ উপজেলায়। এবার এ উপজেলায় কোরবানি দাতাদের চাহিদার তালিকায় গরুর চেয়ে মহিষের চাহিদা গেল বছরগুলো থেকে আরও কয়েকগুণ বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা।

শুক্রবার (১৭ আগস্ট) জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার অন্যতম পশুরহাট জঙ্গলমিয়ায় গিয়ে এমন চিত্রই দেখা যায়। এর আগে বুধবারে ছাগলনাইয়া সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠ, বৃহস্পতিবারে চাঁদগাজী হাইস্কুল মাঠের পশুরহাটেও ছিল মহিষের আধিক্য।

বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় এ অঞ্চলের মানুষ গরু ও ছাগলেই কোরবানি দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। এমনকি কয়েক বছর আগেও স্থানীয়ভাবে গরু-ছাগল ছাড়া অন্য পশু দিয়ে কোরবানি করতেন না সেখানকার লোকজন। তবে এখন সময় পাল্টে গেছে, গরু-ছাগলের পরিবর্তে কোরবানিতে পশুর চাহিদায় মহিষও রযেছে।

সরেজমিনে হাটগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে গরু-ছাগলের চেয়ে হাটে মহিষের সংখ্যাই বেশি। ঈদের এখনও চারদিন বাকি থাকায় বিক্রি কম হলেও মহিষের দামাদামি নিয়ে ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা।

উপজেলার মনুর হাটের গরুর ব্যাপারি শাহজাহান মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ফেনীর হাটগুলোতে গরুর চাইতে মহিষের চাহিদা বেশি। তাই হাটের বড় অংশ দখল করে আছে মহিষ। দামও নাগালে রয়েছে। তাই পছন্দ হলেই কিনে নেন ক্রেতারা।

তিনি আরও জানান, বড় সাইজের একটি মহিষ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ, মাঝারি সাইজের ৭০ থেকে ১ লাখ, আর ছোট সাইজের মহিষ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে শুরু করে ৭০ হাজারের মধ্যে।

চাঁদগাজী এলাকার গরু ব্যাপারি সিরাজ মিয়া জানান, এ অঞ্চলে মহিষ আসে উত্তরবঙ্গ ও বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে। পরিবহন ব্যয় ও অন্যান্য দিক মাথায় রেখে গরুর চাইতে মহিষেই ব্যবসা বেশি। কোরবানির হাটে বিক্রি না হলেও ঈদের পরও মহিষের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

বাজার হাসিল আদায়কারীরা বাংলানিউজকে জানান, বিগত বছরগুলোতেও এ বাজারে মহিষের বিক্রি ছিল বেশি। এবারও প্রচুর মহিষ ওঠেছে। বিক্রিও বেশ ভালো। গরুর অস্বাভাবিক মূল্য বাড়ার কারণে মহিষের চাহিদা বেড়েছে বলে মনে করেন তারা।
 
গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত মহিষ কোরবানি দেওয়া ছাগলনাইয়া পৌর এলাকার আফসার উদ্দিন জানান, গরু কিনতে গিয়ে রং, শিংসহ সবদিক পছন্দ করতে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। কিন্তু মহিষ কেনার বেলায় সে ধরনের সমস্যা নেই।

এদিকে, মহিষের মাংসও গরুর মাংসের চাইতে নিরাপদ বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গরুর মাংসের চাইতে মহিষের মাংসে সব ধরনের ঝুঁকি কম। মহিষের মাংস খেলে উচ্চ রক্তচাপ হয় না, মাথা ঘুরে না, শরীরে কোনো অস্বাভাবিকতাও দেখা দেয় না। এমনকি ডায়াবেটিস  রোগীরাও মহিষের মাংস খেতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, মহিষকে গরুর মতো কোনো দানাদার বা কৃত্রিম খাবার খাওয়ানো হয় না। এটি পালিত হয় দুর্বল খাবারে। ফলে মহিষের শরীরে কোনো চর্বি জমে না বলে বয়স্করাও এটি খেতে পারেন নির্বিঘ্নে। আর সে কারণেই মহিষের মাংস গরুর মাংসের চাইতে অনেকাংশে নিরাপদ।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
এসএইচডি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।