ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ক্রেতারা ছুটছেন পশু জবাইয়ের সরঞ্জামের দোকানে 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
ক্রেতারা ছুটছেন পশু জবাইয়ের সরঞ্জামের দোকানে  কামারের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়-ছবি-বাংলানিউজ

ময়মনসিংহ: আর মাত্র পাঁচদিনের মাথায় ত্যাগের ঈদুল আজহা। আল্লাহ’র সন্তুষ্টি লাভের জন্য সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি দেন। আর এই পশু কোরবানি দিতে মাংস কাটা, চামড়া ছাড়ানোসহ বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন ছুরি, চাকু, দা, চাপাতি, বটি, গাছের গুঁড়িসহ কত কি।

ফলে হাট থেকে আগেভাগেই পশু কিনে ফেলেছেন এমন ক্রেতারা ছুটছেন পশু জবাইয়ের এসব সরঞ্জামের দোকানে। ক্রেতাদের পদভারে এসব দোকানে রীতিমতো ভিড় লেগে গেছে।

দরদাম করেই ক্রেতারা কিনছেন।  

আবার শহরের বাইরে বিভিন্ন গ্রাম থেকেও লোকজন চাকু, চাপাতিসহ নানা সরঞ্জাম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ঈদের দিন দুয়েক আগে ক্রেতাদের উপস্থিতি আরও বাড়বে। তখন বিক্রি পুরোমাত্রায় জমে ওঠবে বলেই প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।  

বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে শহরের কোরবানির পশু জবাইয়ের সরঞ্জামের বাজার হিসেবে পরিচিত স্বদেশী বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্র।  

এই বাজারের সালাম স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুস সালাম জানান, ঈদের দিন কয়েক আগে প্রতিবারই কাঙ্খিত পশু কেনার পর সবাই এসব উপকরণ সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পশু কোরবানি থেকে শুরু করে চামড়া ছাড়ানো পর্যন্ত এসব অনুষঙ্গের কোনো বিকল্প নেই।  

প্রায় ২৩ বছর যাবৎ এই বাজারেই ছুরি-দা-চাপাতির ব্যবসা করেন স্বপন ভট্টাচার্য্য। পঁয়ত্রিশের কোঠায় বয়স। তার দোকানের নাম কমলা স্টোর। দাদা-বাবা’র পর বংশ পরম্পরায় এই পেশায় নিজেও জড়িয়ে পড়েন শৈশবেই। স্থানীয় কামারদের পাশাপাশি মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়া, ব্রাক্ষণবাড়িয়া ও বগুড়া থেকে এসব সরঞ্জাম পাইকারি দামে কিনে আনেন।  

আলাপচারিতায় স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, ঈদকে টার্গেট করে প্রতি বছরই কয়েক হাজার চাপাতি, দা-ছুরি পাইকারি দামে বাইরের কামারদের কাছ থেকে অর্ডার দিয়ে কিনে আনি। এর সঙ্গে কুড়াল, বটিও রয়েছে। ঈদের সপ্তাহখানেক আগে থেকে ক্রেতাদের ছুটোছুটি শুরু হয়। এবার বিক্রি আরও জমে উঠবে।  

বাজার ঘুরে দেখা গেলো, পশু জবাইয়ের প্রতিটি সরঞ্জামের দাম গত বছরের তুলনায় এবার একটু বেশিই। ৩শ’ থেকে ৫’শ টাকায় চাপাতি, ২শ’ থেকে ৮শ’ টাকায় বটি, ১২০ থেকে ৩শ’ টাকায় দা, ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকায় ছোট-বড় ছুরি ও ৪০ থেকে ৮০ টাকায় চাকু বিক্রি হচ্ছে।  

সদর উপজেলার চুরখাই এলাকা থেকে এখানে ছুরি-চাকু কিনতে এসেছেন রুহুল, তুহিন, সিরাজসহ কয়েকজন। তারা স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ী। তারা জানান, সব সময় ছুরি-চাপাতি কেনার কথা মনে থাকে না। তখন ঈদের দিন সকালে হা-পিত্যেশ করতে হয়। ফলে আগেভাগেই কোরবানির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি কিনতে এসেছি। যেন অন্য কারো কাছে হাত পাততে না হয়।  

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, লোহা ও কয়লার দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এর উত্তাপ পড়েছে এসব দোকানে। এছাড়া কারিগরদের (কামারদের) বেতনও এখন বাড়তি। ফলে প্রতিটি সরঞ্জামে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা দাম বেড়েছে।  

এই বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী সিধাম ভট্টাচার্য্য (৬০) বাংলানিউজকে জানান, ঈদের সপ্তাহখানেক সময়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার মতো বিক্রি হয়। তবে ঈদের দুইদিন আগে ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা বসে যান। ফলে লোকসান দিয়েই তখন মালামাল বিক্রি করতে হয়।  

এসব সরঞ্জামের পাশাপাশি কোরবানির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে মাংস সুচারুরূপে কাটার জন্য ব্যবহৃত খাইট্যা। ৫০ বছর বয়সী সাধন বাবু এই খাইট্যার ব্যবসা করেন। তার দোকানে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যেই খাইট্যা পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮ 
এমএএএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ