আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অগ্রিম টিকিট নেওয়ার জন্য এসেও পাইনি। সড়কপথে যাবো না।
তার মতো এভাবে অনেকেই ঈদে সিলেট থেকে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে কষ্ট করে হলেও ট্রেনে যাত্রা করছেন ‘স্ট্যাডিং’ টিকিটে। কোচ ও আসন সংকট থাকায় স্ট্যান্ডিং টিকিটই ভরসা যাত্রীদের।
সিলেট থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফেরা ঘরমুখো মানুষের জন্য এবারো নেই বিশেষ ট্রেন। কাউন্টারে টিকিট নেই। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন কেবল স্ট্যান্ডিং টিকিট কিনতে। ঈদ-পূজা পার্বনে সিলেট রুটে বিশেষ ট্রেন না থাকায় আসন সংকটে যাত্রী ভোগান্তি নতুন নয়।
কেবল দু’টি ট্রেনে মাত্র ৩টি অতিরিক্ত কোচ যোগ করা হয়েছে। ফলে বরাবরের মতো এবারো অবহেলিত সিলেট রুটের ট্রেন যাত্রীরা।
ট্রেনগুলোতে আগে যত কোচ ছিল, সেগুলো থেকে আরও কমিয়ে আনা হয়েছে। এসব কারণে সিলেট রুটে ট্রেনযাত্রায় যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে এবারো।
অনেকে স্বজনদের নিয়ে বাড়ি ফিরতে স্টেশন গিয়ে টিকিট খুঁজে ফিরছেন ব্যর্থ মনোরথে। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা শাবিপ্রবির ছাত্র আরিব হোসেন বলেন, ভার্সিটি বন্ধ হয়েছে, বাড়ি যাবো। স্টেশনে কাউন্টারে গেলে মুখস্ত শব্দ টিকিট নেই। বুঝলাম আসন সংকট, তাহলে পর্যাপ্ত কোচ বাড়ানো হয় না কেনো? বা ঈদে এই রুটে বিশেষ ট্রেন কেন দেওয়া হয় না? যাত্রীদের এমন ভোগান্তি, সংশ্লিষ্টরা নজরে আনবেন বলে আশাবাদী তিনি।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, সিলেট-ঢাকা রুটে কালনী, জয়ন্তিকা, পারাবত, উপবন এবং চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনে যাত্রী সাধারণের জন্য পর্যাপ্ত কোচ ছিল। এখন সব ক’টি ট্রেনে কোচ সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে অব্যবস্থাপনা হতবাক করে যাত্রীদের।
প্রতিবার ঈদ এলেই কেবল বিশেষ ট্রেন দেওয়ার দাবি উঠলেও বঞ্চিত থেকে যায় সিলেট রুট। কেবল ২/১টি ট্রেনে ১ বা ২টি কোচ সংখ্যা বাড়ানো হয়। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিশেষ ট্রেনের দাবি উঠলেও সিলেট-চট্রগ্রাম রুটে চলাচল করা পাহাড়িকায় ১টি ও উদয়ন ট্রেনে ২টি কোচ সংযুক্ত করা হয়েছে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ব্যবস্থাপক কাজী শহিদুর রহমান বাংলানিউজকে ৩টি কোচ সংযুক্তির তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঈদুল আজহায় ঢাকা রুটে কোনো ট্রেনে নতুন কোচ লাগছে না। এই রুটে ৯টি কোচ নিয়ে কালনী এবং ১৬টি করে কোচ নিয়ে পারাবত, জয়ন্তিকা, উপবন এক্সপ্রেস চলাচল করছে। লোকাল হিসেবে সুরমা মেইলে ৩টি, কুশিয়ারা ও জালালাবাদ মেইল ৪ করে কোচ নিয়ে চলছে।
তিনি বলেন, ঈদে যাত্রীদের তুলনায় ট্রেনের কোচ কম থাকে। আসন সংকট থাকে বেশি। বিশেষ ট্রেন বা কোচ আরো বাড়ালে যাত্রীরা সুবিধা ভোগ করতে পারতেন।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে সিলেট-ঢাকা রুটে ১৪টি কোচ নিয়ে যাত্রা শুরু করে কালনী এক্সপ্রেস। গত বছর পর্যন্ত ৪টি কোচ নিয়ে যাত্রী পরিবহন করে। অবশ্য এ বছরের শুরুর দিক থেকে ৮টি কোচ নিয়ে চলাচল করেছে। পরে আরেকটি কোচ বাড়ানো হয়। সিলেট-ঢাকা রুটে জয়ন্তিকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস শুরুতে ১৬টি কোচ নিয়ে চলাচল করলেও মাঝে কমে ১২টি কোচ করা হয়। পরে অবশ্য আরো চারটি কোচ যুক্ত করা হয়। সিলেট-ঢাকারুটে চলা পারাবত এক্সপ্রেসে এখন ১৬টি কোচ আছে।
এছাড়া সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী উদয়ন ও পাহাড়িকা ১৪টি কোচ নিয়ে যাত্রা কমিয়ে নেওয়া হয় ৯টিতে। অবশ্য এই ট্রেনের কোচ সংখ্যা এখন ১৬টি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
এনইউ/এএ