কোরবানির ঈদের আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। তাই কামারশালার হপারও যেনো হাঁপিয়ে উঠেছে।
স্টেডিয়াম পাড়ার কর্মকার রেজাউল ইসলাম ভেদু বলেন, সারা বছর তাদের তেমন খোঁজ-খবর রাখেন না কেউই। কেবল ওয়েল্ডিংয়ের কারখানারই বেশি কাজ থাকে। এছাড়া সব সময়ের জন্য কিছু কোদাল, কাঠ কাটার কুড়াল, ছুরি, চাপ্পর প্রভৃতি তৈরি করে কোনোভাবে জীবিকা চালান।
কিন্তু কোরবানির আগে এক মাস থেকে তাদের কাজ বাড়ে। বিশেষ করে পনেরো দিন আগ থেকে বেশি চাপ পড়ে। এ সময় এতটাই ব্যস্ততা বাড়ে যে, কারও সঙ্গে কথা বলারও ফুরসত থাকে না। তবুও ভালো লাগে। কারণ এই এক মাসের আয়ের ওপর ভর করেই সারাবছর চলতে হয় তাদের।
রেজাউল ইসলাম বলেন, চার পুরুষ থেকে কামারের কাজ করেন তারা। তাই নিজের ছেলে সোহাগকেও কাছে রেখে কাজ শেখাচ্ছেন। এই পেশায় আর আগের মতো আয় না থাকলেও পৈত্রিক পেশা কখনও ছাড়বেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন ভেদু।
তিনি বলেন, কাজের চাপ বেশি হওয়ায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। গত বছরের তুলনায় লোহার দাম কিছুটা বেশি। বর্তমানে চাপাতি বা চাপ্পর সাড়ে ৩শ’ টাকা কেজি, ছুরি ৪শ’ টাকা কেজি এবং বটি সাড়ে ৩শ’ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করছেন তারা। চাহিদা থাকায় ক্রেতাদের জন্য নিত্যনতুন হাতিয়ার তৈরি করছেন। আর আকার ভেদে ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকার মধ্যেও কোরবানির জন্য বিভিন্ন হাতিয়ার তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বড় ছুরি ৪০, চাপাতি ৬০, দা ৫০ এবং ছোট ছুরি ২০ টাকায় শান দিচ্ছেন তারা।
জানতে চাইলে স্টেডিয়াম পাড়ার অপর কর্মকার পলক বলেন, আগামী ২২ আগস্ট কোরবানির ঈদের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় দা-ছুরি সংস্কারের জন্য নগরবাসী ইতোমধ্যে ভিড় করছেন তাদের কাছে। কেউ দাম-দর করছেন বাজার বোঝার জন্য কেউবা কিনে নিচ্ছেন পছন্দের দা-ছুরি। তবে শেষের দিকে পুরনো চাপাতি ও ছুরি শান দেওয়ার চাপই বেশি পড়ে। এক বছর ঘরে রেখে দেওয়া ধারালো অস্ত্র বের করে সবাই। তাই চাঁদ রাত পর্যন্ত তাদের ব্যস্ততা থকবে বলেও জানান পলক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
এসএস/আরআর