ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পুরনো চেহারায় ফিরছে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
পুরনো চেহারায় ফিরছে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা রাজধানীর সড়কে তীব্র যানজটের দৃশ্য/ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঘোষিত দশ দিনব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হয়েছে মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট)। ট্রাফিক সপ্তাহে বাসমালিক, ড্রাইভার, বাইকাররা তটস্থ থাকলেও ট্রাফিক সপ্তাহ শেষে হতে না হতেই আগের অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে জনবহুল রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা।

ট্রাফিক সপ্তাহ শেষে তুলনামূলক ছাড় পাওয়া ও আইন মানার প্রতি চিরন্তন অনীহা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এক শ্রেণির মানুষের কাছে। ফলে ট্রাফিক সপ্তাহ শেষেই আবার পুরনো রূপে ফিরছে চিরচেনা পরিবহন সেক্টর।

 

বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) সরেজমিনে পুরান ঢাকার বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালীন সময়ে ভিক্টোরিয়া পার্কের চারপাশে ভাঙাচোরা, লাইসেন্সবিহীন সারি সারি গাড়ির কোনটিই আর এখন পড়ে নেই। সব আবার চলতে শুরু করেছে রাজপথে। পুনরায় শুরু হয়েছে আগে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা। উচ্চহর্ণে যাত্রী আকৃষ্টের কৌশল, শুরু হয়েছে যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা ও আইন না মানার প্রবণতাও।  

শুধু যে বাস চালক বা বাসের ক্ষেত্রেই সমস্যা ফিরে এসেছে এমন নয়। নগরীতে চলা মোটরবাইকগুলো এতদিন আইন মেনে সবার মাথায় হেলমেট ব্যবহার ও ফুটপাতে না উঠালেও এখন তা আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। ফুটপাত দিয়ে অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যও চোখে পড়েছে। সাধারণ মানুষও ফুটওভার ব্রিজের ব্যবহারের স্থলে ‘দৌঁড়ে রাস্তা পার’ হওয়ার চেষ্টায় মগ্ন।  

হেলমেট বিহীন বাইকার বাংলানিউজকে বলেন, ওয়ারি থেকে সদরঘাট যেতে একটু দূরত্ব তাই আর হেলমেট পরিনি! তাছাড়া এখন পুলিশ ধরা একটু কমিয়েছে তাই সমস্যা হয়না।  

সরকারি কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী ইসহানুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সুপ্রভাত ও ডি-লিংকের প্রায় ৩০-৩৫টি বাস এখানে (ভিক্টোরিয়া পার্ক মোড়) ৬/৭ দিন পড়ে ছিলো। ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হতেই চলতে শুরু করেছে। এর মানেই বুঝা যায় এগুলোর সমস্যা ছিল তাই ট্রাফিক সপ্তাহে চালানো হয়নি। প্রশাসনের উচিত এসব পরিবহনের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া।

ভিক্টোরিয়া পার্ক মোড়ে দায়িত্বরত এক সার্জেন্ট বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হলেও আমাদের অভিযান সবসময় চলবে। কিন্তু সমস্যা হলো কেউ নিজে থেকে আইন মানতে চান না। শুধু পুলিশের একার দ্বারা এ সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। এই ধরুন আমরা ১০ দিন কাজ করলাম সবাই হেলমেট পড়লো, আবার এখন দেখবেন অনেকেই হেলমেট ছাড়াই বাইক চালাচ্ছে। এভাবে তো হয়না, সবাইকে নিজে থেকে সচেতন হতে হবে।  

প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই কুর্মিটোলায়া জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর সারাদেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আসেন। আন্দোলন চলাকালীন সময় পুলিশ ঘোষণা দেয় ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের। প্রথমে ৭ দিনের ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ১০ দিন করা হয়।  

১০ দিনে সারাদেশে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ২৪৯টি। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৭ কোটি ৮ লাখ ১৪ হাজার ৩৭৫ টাকা। ৭৪ হাজার ২২৪ জন চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৫ হাজার ৪১৮টি যানবাহন।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
কেডি/এসআই/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।