ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মায় নাব্যতা সংকট, ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের শঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
পদ্মায় নাব্যতা সংকট, ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের শঙ্কা সকল প্রকার ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে

মাদারীপুর: পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারন করায় কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফেরি চলাচল। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সাধারণ যাত্রীরা।

ঈদকে সামনে রেখে দুই/তিন দিনপর থেকেই ঘরে ফিরতে শুরু করবে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। এ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলে চরম দুর্ভোগ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সাধারণ যাত্রীরা।

তবে কর্তৃপক্ষের দাবি দুই/এক দিনের মধ্যেই ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে।

এ নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রীরা বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর এমন সময় নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরিসহ নৌযান চলাচল ব্যহত হয়। ফেরি চলাচল ব্যহত হওয়ায় পরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপারে সৃষ্টি হয় জটিলতা। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।  

যাত্রীরা আরো জানান, ফেরি চলাচল ব্যহত হলে লঞ্চ ও স্পিডবোটের ওপর চাপ পড়বে বেশি। আর এর মধ্যে যদি বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করে তাহলে দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা যায়, লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের চ্যানেলমুখে নাব্যতা সংকটের কারণে শনিবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৫টা থেকে সকল ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফেরি চলাচলের জন্য চ্যানেল মুখে যতটুকু পানি থাকা প্রয়োজন তা না থাকায় ফেরি ডুবোচরে আটকে যায়। ফলে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে এই চ্যানেলটি। এজন্য দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। সপ্তাহখানেক আগেই তিনটি রোরো ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় এ নৌরুটের ১৯টি ফেরিই বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে নাব্যতা সমস্যা নিরসনে খননকাজ শুরু হলে কে-টাইপ ফেরিগুলো স্বল্প যানবাহন নিয়ে চলাচল করলেও নৌরুটের সকল ফেরি চলাচল এখনো স্বাভাবিক হয়নি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া ঘাট সূত্র জানায়, কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটের লৌহজং চ্যানেলে নাব্যতা সংকট কাটিয়ে উঠতে সাতটি খননযন্ত্র খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। চ্যানেল মুখে প্রায় ১০ লাখ ঘনমিটার পলি জমেছে। ইতোমধ্যে পাঁচ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হয়েছে। এই খননকাজ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যহত থাকবে।

কাঁঠালবাড়ী ঘাটের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঈদের আগে ও পরে প্রায় ১৫ দিন পর্যন্ত ব্যস্ত হয়ে উঠবে এ নৌরুট। আর এই মুহুর্তে নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারন করায় ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে। ফেরি চলাচল ব্যহত হলে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরে ফেরা মানুষকে দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই ঘরে ফিরতে হবে। তবে লঞ্চ ও স্পিডবোট যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ হতে পারে।

বিআইডব্লিউটিএ’র কাঁঠালবাড়ী লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, চ্যানেলমুখে নাব্যতা সমস্যার কারণে নৌযান চলাচল ব্যহত হচ্ছে। তাছাড়া গত কয়েকদিন ধরেই ফেরি চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে। ঈদ মৌসুমে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে এই নৌরুটে। নাব্যতা সমস্যার কারণে নৌযান চলাচল ব্যহত হলে দুর্ভোগ হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে চ্যানেলে খননকাজ চলছে। শীঘ্রই এ নৌরুট সচল হবে।  

তিনি আরো বলেন, বর্ষা মৌসুমে লঞ্চ চলাচলে কঠোর নিয়ম মেনে চলা হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী বহনে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। ঈদে যাত্রীদের চাপ মোকাবিলায় ৮৬টি লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে, এছাড়াও রয়েছে দুই শতাধিক স্পিডবোট।

কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, নাব্যতা সংকট নিরসনে চ্যানেলে খননকাজ চলছে। কে-টাইপ ফেরিগুলো চলছে। তবে ঈদের আগেই নৌরুট সচল হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।