ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সহজ হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৮
আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সহজ হবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে সবপক্ষকে একীভূত হয়ে কাজ করা জরুরি উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, সংকটে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারে তার প্রমাণ রোহিঙ্গা সংকট। একসঙ্গে এতো সংখ্যক শরণার্থী এলেও একটি মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। এটিই মানবতার জন্য আমাদের লড়াইয়ের বড় সফলতা।

তিনি বলেন, এ সফলতা আনয়নে কক্সবাজারের মানুষ রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এখন রোহিঙ্গাদের সফল প্রত্যাবাসনকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা পেলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সহজতর হবে।

মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজারের একটি হোটেল বেসরকারি সেবা সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে শুরু হয় আলোচনা। এতে কক্সবাজার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা অংশ নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।

তারা বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন। এক বছরে সংকট মোকাবেলায় রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার বিষয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে রেহিঙ্গাদের তাদের মাটিতে ফিরিয়ে নিতে সবার একসঙ্গে কাজ করাটা জরুরি। সংকটের সুষ্ঠু সমাধানে ডকুমেন্টেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এজন্য ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়াতেও গুরুত্ব দেয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ে রয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। দেশহীন রোহিঙ্গারা সারাবিশ্বের সবচেয়ে বিপদাপন্ন জাতির মধ্যে একটি, যারা ন্যূনতম মানবিক অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নাগরিক হিসেবে মিয়ানমার কর্তৃক স্বীকৃতি পায়নি, যেখানে তারা প্রতিনিয়ত যুদ্ধ এবং সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর ফলে সর্বপ্রথম সত্তরের দশক, এরপরে নব্বইয়ের দশক এবং সর্বশেষ গত তিনবছরে তারা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। ২০১৭ সালের আগস্টের আগে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে অবস্থান করছেন। রাখাইন রাজ্যে নতুনভাবে সহিংসতা এবং নির্যাতন শুরুর পর গেল বছরের ২৫ আগস্টের পর আবার ৮ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসেন। এতো অল্প সময় বিশাল সংখ্যক মানুষের দেশছাড়া হওয়ার ঘটনাটাটি বিশ্বেও সবচেয়ে দ্রুত বর্র্ধিত শরণার্থীর আশ্রয়স্থল হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে সারাবিশ্বে পরিচিত।
 
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল।

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে আসায় স্থানীয় জনগণ ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের দৃশ্যগুলো ধারণ করায় চিত্রগ্রাহক এবং আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজক অ্যাকশনএইড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান বক্তারা। ছবিগুলো ভবিষ্যতে ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের’ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মতদেন তারা।

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের বোর্ড প্রধান ব্যারিস্টার মঞ্জুর হাসান ওবিই’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- আলোকচিত্রী মাহমুদ রহমান, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরসহ অন্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৮
টিটি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।