ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১৫ আগস্টে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৮
১৫ আগস্টে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও অন্যরা

ঢাকা: ১৫ আগস্ট (বুধবার) জাতীয় শোক দিবসের নিরাপত্তায় সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তারপরেও অতীত ইতিহাস বিবেচনায় রাজধানীজুড়ে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ১৫ আগস্ট ঘিরে সুস্পষ্ট কোন হুমকি নেই, তারপরেও আমরা কোনো আশঙ্কাই উড়িয়ে দিচ্ছি না।

একটি স্বার্থান্বেষী মহল সেই ১৯৭১ সাল থেকেই সক্রিয়। অতীতেও সেই স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা আমরা কঠোরভাবে দমন করেছি।

এবারো কোনো হুমকি না থাকা স্বত্ত্বেও গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক ব্লকরেইড, তল্লাশি চলছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। সারা শহরে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ১৫ আগস্ট ধনমন্ডি ৩২ সংলগ্ন হোটেল ওলিওতে একটি জঙ্গি তৎপরতা নস্যাৎ করার বিষয়ে তিনি বলেন, জঙ্গিরা একেক সময় একেক নামে সামনে এলেও এদের রুট আসলে একটাই। গত বছরের ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এ পর্যন্ত আমরা ১৪ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি, যার মধ্যে ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

‘তাদের পরিকল্পনা ছিলো ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ এ শোক দিবসের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। কিন্তু আমাদের তৎপরতায় তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে’।

ধানমন্ডি ৩২ কেন্দ্রীক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, ১৫ আগস্ট ঘিরে ডিএমপি'র পক্ষ থেকে ব্যাপক, সমন্বিত, সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। ৩২ নম্বর ও আশেপাশের এলাকায় কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রবেশপথে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে তল্লাশির মাধ্যমে সবাইকে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে হবে।

সকাল সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পুস্পার্ঘ অর্পনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সবাই রাসেল স্কয়ার হয়ে প্রবেশ করে পুস্পার্ঘ অর্পন করে পশ্চিম পাশ দিয়ে বের হয়ে যাবেন।

ভিভিআইপি মুভমেন্টের সময় সোনারগাঁও ক্রসিং থেকে রাসেল স্কয়ার, ধানমন্ডি ২৭ থেকে রাসেল স্কয়ার, সিটি কলেজ থেকে রাসেল স্কয়ার যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

তিনি বলেন, ধানমন্ডি ৩২ ও বনানী কবরস্থান এলাকা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাধ্যমে সুইপিং করা হবে। ডিএমপি ও র‌্যাবের ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমেও সুইপিং করা হবে। ৩২ নম্বরে পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে।

বিভিন্ন মহল্লায় ভোজের আয়োজন করা হবে। সেসব স্থানের নিরাপত্তা নিয়েও আমরা আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রয়োজনে সেসব স্থানেও আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে এবং সিসিটিভি বসানো হবে। অনুষ্ঠানে যে কোন ত্রুটি এবং নাশকতা এড়াতে আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশ কাজ করবে।

শ্রদ্ধা নিবেদনে আসার সময় কেউ হ্যান্ডব্যাগ, ভেনিটিব্যাগ, ব্যাকপ্যাক, দাহ্য পদার্থ, ছুরি-কাঁচি বহন করতে পারবেন না। চারপাশ দিয়ে প্রবেশের সময় তল্লাশি করা হবে, আবার অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের সময় আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় এসএসএফ দায়িত্ব পালন করবেন।

গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্লকরেইড চলছে। গতকালও দুই হাজার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে আগারগাঁও, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ এলাকায় ব্লকরেইড চালানো হয়েছে। রাজধানীজুড়ে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

নিরাপত্তা তল্লাশিতে সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কেউ সেলফি তুলে সময় নষ্ট করবেন না। নিজে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ করে অন্যকে শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ করে দেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৮
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ