ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সীমান্তের ওপর নির্ভর করবে খামারিদের ভাগ্য

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৮
সীমান্তের ওপর নির্ভর করবে খামারিদের ভাগ্য খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কল্যাণ কুমার ফৌজদার। ছবি: বাংলানিউজ

যশোর: কোরবানি ঈদের আগামী নয় দিন সীমান্তে কড়াকড়ির ওপর গবাদিপশু খামারিদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কল্যাণ কুমার ফৌজদার।

বিগত কয়েক বছরের তুলনায় আসন্ন কোরবানি ঈদে সীমান্ত পথে সবচেয়ে কম ভারতীয় গরু এসেছে, এতে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের মধ্যে যথেষ্ট স্বস্তি ফিরেছে। তবে গত কোরবানি ঈদের শেষ মুহূর্তে সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু ঢুকার কারণে বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছিল, এজন্য পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন খামারিরা।

সোমবার (১৩ আগস্ট) যশোরে অবস্থিত খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় কল্যাণ কুমার ফৌজদার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, খুলনা বিভাগের বিশাল এলাকাজুড়ে ভারতীয় সীমান্ত। ফলে কখনোই পুরোপুরিভাবে ভারতীয় গরু-মহিষের ঢুকা বন্ধ থাকে না। গত বছর কোরবানি ঈদের আগে থেকে সীমান্ত পথে গরু ঢুকা বন্ধ ছিল। কিন্তু ঈদের বাজারের শেষ দিকে ভারতীয় গরু ঢুকে বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। এমনকি, দেশের লাখো খামারি গরু বিক্রি করতেও পারিনি। এতে দেশীয় খামারিরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেসব বিষয় এবার আমরা বিভিন্নভাবে সরকারকে অবহিত করেছি। তবে এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। গত বছরগুলোতে দেশীয় খামারিদের লোকসানের বিষয়টি সরকারের নজরে রয়েছে। এরই আলোকে গত ৬ আগস্ট খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের উপস্থিতি বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় ভারতীয় গরু আসবে না বলে বিজিবির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, খুলনা বিভাগের নিবন্ধিত ৬২ হাজার ৪৪০ জন খামারি কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ৮ লাখ ১৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত করেছে। এছাড়াও গ্রামে পারিবারিকভাবে কোরবানির উদ্দেশে আরো ২ থেকে ৩ লাখ গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা খুলনা বিভাগে কোরবানির জন্য যথেষ্ট পশু। এতে ঘাটতি হবে না। তবে পশু হাট-বাজারে ট্রাফিক ব্যবস্থা, রাস্তায় পশুর ট্রাকে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি না হলে বাজারেও দাম নিয়ে অস্থিরতা হওয়ার শঙ্কা নেই। ক্রেতা সাধারণকে নিরাপদ তথা স্বাস্থ্যবান পশু কিনতে প্রাণিসম্পদ বিভাগের মেডিকেল টিম প্রত্যেক বাজারে থাকবে।

তিনি বলেন, কোরবানিকে টার্গেট করে ৬ থেকে ৮ মাস আগে থেকে খামারিরা অবিরাম পরিশ্রম করেছেন। এসব খামারিকে অর্গানিক পদ্ধতিতে দেশীয় গরু পালনে উৎসাহিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং-সেমিনার করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

এছাড়াও খামারিদের সহযোগিতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে আসছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। ফলে আমরা কোনোভাবেই চাই না ভারতীয় গরু ঢুকে দেশীয় খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হোক। এটা হলে তারা নিরুৎসাহিত হবে। পরবর্তীতে একটা সময়ে এর বিরাট প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে ভিনদেশি রোগাক্রান্ত গরু বিশেষ ওষুধে মোটাজাতকরণে ফুলে-ফেঁপে ওঠা গরুর মাংসে বিভিন্ন রোগব্যাধির সংক্রামণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভোক্তারা। তবে উচ্চ দাম নয়, প্রকৃত দাম পেলে এবার দেশীয় খামারিরা লাভবান হবে বলেও মত দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৮
ইউজি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।