ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মাস্টার্সের সমমান পেলো দাওরায়ে হাদিস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৮
মাস্টার্সের সমমান পেলো দাওরায়ে হাদিস

ঢাকা: কওমি মাদরাসার প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থীকে মূল ধারায় নিয়ে আসতে এ শিক্ষা পদ্ধতির দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) এর সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি সমমান প্রদান করে একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১৩ আগস্ট) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘কওমি মাদরাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল) এর সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্ট্যাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান আইন, ২০১৮’ শীর্ষক আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তাদের ছয়টি কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড আছে। সারাদেশে যেসব কওমি মাদরাসা আছে সেগুলোকে এই ছয়টি বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করে। এই ছয়টি বোর্ড নিয়ে ‘আলহাইয়্যাতুল উলিয়ালিল জামিয়াতুল কওমিয়া বাংলাদেশ’ নামে কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড করা হবে। এর কার্যালয় হবে ঢাকায়।

পরিচালনার জন্য নয় ধরনের ব্যক্তি নিয়ে কমিটি গঠিত হবে।

চেয়ারম্যান হিসেবে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সভাপতি, কো-চেয়ারম্যান বেফাকুল মাদারিসিলের সিনিয়র সহ-সভাপতি, বেফাকুল মাদারিসিল আবারিয়ার পাঁচজন সদস্য পদাধিকার বলে বোর্ড বা মহাসচিব নির্ধারণ করে দেবেন।

গওহরডাঙ্গার বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া, চট্টগ্রামের আন্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসিল কওমিয়া, বগুড়ার আযাদদ্বীনি এদারায়ে তালিম, বগুড়ার তানজীমুল মাদারিসিল কওমিয়া এবং জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে দুইজন করে সদস্য থাকবেন।

এছাড়া চেয়ারম্যান ইচ্ছে করলে যে কাউকে কো-অপ্ট করতে পারবেন। তবে সংখ্যা ১৫ এর বেশি হবে না।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল, সেটাকেই আইনে আনা হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনে যে সনদকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এ পর্যন্ত যত সনদ দেওয়া হয়েছে, তা এই আইন অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে।

স্থায়ী কমিটি সনদ নিয়ে যাবতীয় বিষয়ে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত দেবে। কমিটি কর্তৃক নিবন্ধিত মাদরাসাগুলোর দাওয়ায়ে হাদিসের সনদকে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবির মাস্টার্স সনদের সমমান বিবেচিত হবে। এই কমিটির অধীনে ও তত্ত্বাবধানে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা হবে। সিলেবাস প্রণয়ন, পরীক্ষা পদ্ধতি, অভিন্ন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল ও সনদ তৈরিসহ অন্যান্য কাজে এক বা একাধিক কমিটি করতে পারবে। কমিটি দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকবে।

বোর্ডে সরকারের প্রতিনিধি নেই এবং বোর্ড কিভাবে ডিগ্রি দেবে? এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা আসলে কমিটি যেটা ছিল সেটাকে বোর্ড আকারে নিয়ে আসা হয়েছে। ছয়টি বোর্ডকে একীভূত করে বোর্ড করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন ছাড়া মাস্টার্স ডিগ্রি কিভাবে দেওয়া হবে? সে প্রশ্নে শফিউল আলম বলেন, এটা ব্যতিক্রম বিষয়। এটা হল মূলত কওমি মাদরাসার প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থীকে মূলধারায় নিয়ে আসা। এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এরা কিন্তু সমস্ত সরকারের আওতার বাইরে ছিল।

ইসলামিক অ্যারাবিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে- আইনে এ বিষয়ে কিছু বলা নেই কেন? এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভবিষ্যতে হয়তো বিবেচনায় আসতে পারে।

মাস্টার্সের আগের অন্য ডিগ্রিগুলোর স্বীকৃতি না দিয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রিকে কিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হল? সে প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা গভর্নমেন্টের পলিসি, আইনের বাইরে আমাদের ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ নেই। দাওরায়ে হাদিসটাকে চূড়ান্ত শিক্ষা সমাপনী হিসেবে গণ্য করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৮
এমআইএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।