রামপুরা ব্রিজ থেকে পূর্বদিকের ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের আবাসন প্রকল্পেই বেশ কয়েক বছর আগে গড়ে ওঠে কোরবানির পশুর হাট। আয়তনের দিক থেকে রাজধানীতে এর চেয়ে বড় পশুর হাট আর নেই।
আগে রামপুরা ব্রিজসংলগ্ন এলাকাতেই হাটটি বসতো। কিন্তু জায়গায় সংকুলান না হওয়ার কারণে আফতারনগরের বেইলি ব্রিজের পর থেকে দিগন্তজোড়া প্লটগুলোতেই কয়েক বছর ধরে পশুর হাট বসে। এরপর সারাবছর অনেকটা পরিত্যাক্ত অবস্থায় সেখানে জন্ম নেয় নানা আগাছা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, যে এলাকাটিতে হাট বসে, সেটা অনেকটা সুনসান। পাকা রাস্তার দু’ধারে মাথা সমান উঁচু উঁচু আগাছা। দু’ চার জন লোক হঠাৎ হঠাৎ এদিক সেদিক যাচ্ছেন। একটু পরপর দেখা মিলছে ল্যান্ড সিকিউরিটি গার্ডদের।
আগাছাগুলো এমন তরতাজা, দেখলে মনে হয় যেন চারণভূমি। নতুন কেউ গিয়ে ভাবতেই পারেন- হয়তো গো-খাদ্যই এখানে চাষাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু বছর ধরে পড়ে থাকা জমিতে এভাবেই মাথা উঁচু করে আগাছাগুলো দাঁড়িয়ে আছে প্রকৃতির আপন খেয়ালে।
এই যখন অবস্থা তখন গুটি কয়েক প্লটে দেখা মিলল বাঁশের পিলার। আর আগাছাগুলো কেটে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে দু’চারজনের দেখা মিলল তারাই জানালেন, পশুর হাটের প্রস্তুতি হিসেবেই এই আয়োজন। তবে বললেন, হাউজিং কর্তৃপক্ষ ভেতরে একটি গেইট আছে যা ভাঙা যাবে না বলে বাঁধ সেধেছে। আর সে কারণে হাট বসবে কি বসবে না তা মীমাংসা হয়নি।
ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের দায়িত্বরত ল্যান্ড সিকিউরিটি উজ্জ্বল দাস বাংলানিউজকে বলেন, এবার হাট নাও বসতে পারে। ঝামেলা চলছে।
ঝামেলার বিষয়ে জানতে ডিএনসিসিতে যোগাযোগ করা হলেও সংস্থাটি কিছু জানায়নি। তাদের বক্তব্য কেবল এতটুকু- এবার আফতাবনগরে হাট বসছে না।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাউল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ভালো বলতে পারবেন।
আমিনুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, স্যার কিছু বলেননি! এবার তো আফতাবনগরে হাট বসবে না।
‘ঝামেলার’ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতো কিছু জানি না। এবার যেসব জায়গায় হাট বসবে বলে বোর্ড সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সে তালিকায় আফতাবনগর নেই।
জঙ্গল পরিষ্কারের উদ্যোগ, আগুন জ্বালিয়ে হাটের উপযোগী করা এবং খুঁটি তৈরির জন্য বাঁশের পিলার দিব্যি জানান দিচ্ছে, শেষ মুহূর্তে এসে হাট বসার প্রক্রিয়াটি হয়তো থেমে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, গুরুত্বপূর্ণ এই পশুর হাট না বসলে এর চাপ গিয়ে পড়বে গাবতলীতে। বড় হাট থেকেই সাধারণত সবাই কোরবানির পশু কিনতে চান। এক হাটে অতিরিক্ত চাপের কারণে ক্রেতার বিড়ম্বনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মফস্বল থেকে আসা সাধারণ পশু বিক্রেতারাও বিপাকে পড়বেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৮
ইইউডি/এমজেএফ