ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সরকারি হাসপাতাল ‘মৃত’ বললেও বেসরকারিতে জন্ম জীবিত শিশুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
সরকারি হাসপাতাল ‘মৃত’ বললেও বেসরকারিতে জন্ম জীবিত শিশুর হাসপাতালের চিকিৎসাধীন খুশি খাতুন। ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে প্রসব বেদনায় বুধবার (৮ আগস্ট) ভর্তি হয়েছিলেন সদর উপজেলার কবুরহাট গ্রামের মনির হোসেনের স্ত্রী খুশি খাতুন। ভর্তির চারদিন পর শনিবার (১১ আগস্ট) সকালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় তার গর্ভের সন্তান জীবিত নেই। মৃত সন্তানকে অপসারণ করতে হবে। 

বাধ্য হয়ে খুশিকে ভর্তি করা হয় কুষ্টিয়া সদর উপজেলা মোড়স্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে জানা যায়, খুশির গর্ভের সন্তানটি মৃত নয়, জীবিত রয়েছে।

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।  

এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে দুই হাসপাতালেই। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খুশি ও তার পরিবার। তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা চায় ভুক্তভোগী পরিবার।

খুশি বাংলানিউজকে জানান, বুধবার তাকে কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদনে দেখা যায়, তার গর্ভের সন্তান জীবিত রয়েছে। পরে চিকিৎসক তাদের সুবিধা মতো সময়ে ডেলিভারি করাবেন বলে জানান। কিন্তু, তিনদিন পর শনিবার ভোরে জানানো হয়, গর্ভের সন্তানটি জীবিত নয়, মৃত।  

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন কথায় খুশি ভেঙে পড়লে স্বামী ও বাবা তাকে নিয়ে যান বেসরকারি ইসলামিয়া হাসপাতালে। সেখানে তার শরীরের অবস্থা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফের আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসকরা জানান, তার গর্ভের সন্তানটি জীবিত রয়েছে। দ্রুত তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিজার করায়। এতে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নবজাতকটির মাথা লম্বা আকৃতির ও শরীরের অবস্থাও খুব একটা ভালো না থাকায় দ্রুত তাকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় সেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে।  

এ বিষয়ে ইসলামিয়া হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সাঈদ বাংলানিউজকে জানান, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের কারণেই মা ও শিশুর জীবন বিপন্ন হতে চলেছে। এমন আচরণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কখনো কাম্য নয়।  

খুশি ও তার পরিবারের সদস্যরা বাংলানিউজকে জানান, কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় দু’টি জীবন সংকটাপন্ন। কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের বিচার চান তারা।  

তবে এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার তাদের দায় অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, খুশি নামে এক প্রসূতি নারী হাসপাতালে ভর্তি হলেও মৃত সন্তান হয়েছে মর্মে হাসপাতালের কেউ নিশ্চিত করেনি। আর এমন ঘটনা সঠিক নয়। যদি হাসপাতালের কোনো স্টাফ জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।