ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

তেজগাঁও পশুর হাট বসবে ১৬ আগস্ট থেকে

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
তেজগাঁও পশুর হাট বসবে ১৬ আগস্ট থেকে মাঠ সংস্কার ‘তেজগাঁও পশুর হাট’ তৈরি করা হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ১৬ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) থেকে বসবে তেজগাঁও হকার্স মার্কেট সংলগ্ন খেলার মাঠের কোরবানি পশুর হাট। মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার  কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড হিসেবে এই খেলার মাঠটি গত পাঁচবছর ব্যবহার করা হয়। ফলে দীর্ঘদিন এই মাঠে পশুর হাট বসা বন্ধ ছিলো। তবে ফ্লাইওভার নির্মাণকারী সংস্থা সরে যাওয়ায় এবার থেকে ফের সেখানে পশুরহাট বসছে। 

শনিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে তেজগাঁও তিব্বত বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০০ গজ পূর্ব দিকে এগিয়ে হাকর্স মার্কেট পেরিয়ে খেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, জনা-বিশেক শ্রমিক মাঠ উন্নয়নের কাজ করছেন।  

মাঠের বাইরে ফুটপাতে তৈরি হচ্ছে হাসিল ঘর ও ব্যাপারীদের বিশ্রামাগার।

মাঠের পশ্চিম পাশের গেট পরিষ্কার করে  উঁচু-নিচু সমান করা হচ্ছে।

পশ্চিম দিকটায় জমে থাকা শ-খানেক অকেঁজো ও নষ্ট রিকশা সরিয়ে নিচ্ছেন গ্যারেজ মালিকরা। একটি অংশে ইট দিয়ে বড় ধরনের একটি পানির হাউজ তৈরি হচ্ছে অস্থায়ীভাবে। সেখানেই বসেছে কয়েকটি অস্থায়ী চায়ের দোকান।  

মাঠের মাঝ খানের মূল গেটে বাঁশ ও রঙিন কাপড় দিয়ে একটি গেট বানানো হয়েছে। যদিও তা এখনও শেষ হয়নি। শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ের আগে যাতে কাজ শেষ করা যায় সে লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, গত পাঁচবছর ধরে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড হিসেবে এই মাঠটি ব্যবহার করে নাভানা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান নাভানা কন্সট্রাকশন লিমিটেড। কাজ শেষে মাঠটি পরিষ্কার না করেই ফেলে গেছে তারা।  

তাই মাঠের বেশির ভাগ অংশজুড়েই পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রীর বর্জ্য। এসব বর্জ্য কোনো রকমে সরিয়ে বালু ফেলে সমতল করার চেষ্টা করছেন শ্রমিকরা।

এরই মধ্যে এই পশুর হাটের অর্ধেকটাজুড়ে গরু বাঁধার খোয়াড় তৈরি হয়েছে। ছোট ছোট বাশেঁর টুকরো সারিবদ্ধভাবে পুঁতে তাতে লম্বালম্বিভাবে বাঁধা হয়েছে দুইটি করে আস্ত বাঁশ। বাকি অর্ধেকের কাজও নাকি দুই দিনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকেরা।

হাটের বাইরের দেয়ালে টানানো ব্যানারের তথ্য অনুযায়ী, এবার এই হাটের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আছেন  ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান খান ইরান।  

ইজারাদার হিসেবে নাম রয়েছে মাসুদ হোসেন সুমন; আর পরিচালক হিসেবে রয়েছে সিরাজুল ইসলামের নাম। মাঠের ঠিকানা ও অবস্থান লেখা আছে, তিব্বতের মোড়, তেজগাঁও সাব রেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন খেলার মাঠ।

মাঠে গিয়ে হাট পালিচালনার সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া না গেলেও হাটের প্রস্তুতি কাজে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা জানিয়েছেন, চলতি মাসের ১৫ আগস্ট থেকে স্বল্প মাত্রায় গরু আসা শুরু হতে পারে এই হাটে। তবে ১৬ আগস্ট থেকে পুরোদমে বেঁচা-কেনা শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছেন হাট পরিচালক কমিটি।  

এই উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে সার্বিক সব ধরনের প্রস্তুতি। ব্যাপারি ও ক্রেতাদের নিরাপত্তায় থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। জাল নোট শনাক্তে থাকছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ বুথ। পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের বিশেষ টিমও থাকবে হাটে।  

এদিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকার হকার্স মার্কেট সংলগ্ন এলাকার মানুষ বেশ উৎসবের আমেজেই আছেন এই হাটটিকে কেন্দ্র করে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, রেস্তোরাঁ ও চা-পানের বিক্রেতারা।  

এরই মধ্যে হাটের আশেপাশে জায়গা ঠিক করে রাখছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও। তারা সেখানে বিকাবেন ঘাস, খড়, ভুসিসহ নানা ধরনের গো-খাদ্য, হোগলার পাটি, মাংস কাটার কাঠের গুঁড়ি, শুকনো খাবার, চা-পান ইত্যাদি।

মাঠ প্রস্তুতিতে অংশ নেওয়া আবুল কালাম বলছিলেন, সারা বছর রিকশা সারাইয়ের কাজ করেন তিনি। এবার গ্যারেজের স্থানে হাট বসায়, তিনি আপাতত হাটের কাজ করছেন। শ্রমিকদের দিয়ে বাঁশ বাঁধার কাজ করছেন তিনিও। দেখাশোনা করছেন বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ ও বাতি লাগানোর কাজও।

বাংলানিউজকে তিনি জানান, এই হাটে সাধারণত গুলশান, মহাখালী, নাখালপাড়া, তেজগাঁও, বনানী, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, তেজতুরি পাড়া, ইন্দিরা রোড, রাজাবাজার এলাকার ক্রেতাদের আসার সম্ভবনা। আগে এইসব এলাকার ক্রেতারা অন্য হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কিনতেন।

চা-দোকানি সোলায়মান আলীর জানালেন, হাটকে কেন্দ্র করে এমনিতেই তাদের মধ্যে উৎসব শুরু হয়েছে। হাটের কয়দিন দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ব্যবসা হবে এবং বাড়তি আয় হবে-এই জন্যে তাদের মধ্যে আগাম এই উৎসবের আমেজ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
আরএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।