ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হলি আর্টিজান মামলায় পুলিশের চার্জশিট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৮
হলি আর্টিজান মামলায় পুলিশের চার্জশিট হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর সাঁজোয়া যান নিয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান (ফাইল ছবি)

ঢাকা: রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা মামলায় ২১ জনকে চিহ্নিত করে আটজনের নামে চার্জশিট আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, এই ২১ জনের মধ্যে ১৩ জন বিভিন্ন সময়ে নিহত হয়েছেন, জীবিত আছেন আট জন।

সোমবার (২৩ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল এ কথা জানান।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, চার্জশিট আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 ২১ জনের মধ্যে পাঁচ জন হলি আর্টিজানে হামলার সময়ই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন, আরও আটজন নিহত হয়েছেন পরবর্তী বিভিন্ন অভিযানে। বাকি জীবিত আটজনের মধ্যে ছয়জন কারাগারে এবং দুইজন পলাতক।

বিভিন্ন অভিযানে নিহত আট আসামি হলেন- তামিম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।

হলি আর্টিজানে সেনাবাহিনীর অপারেশন থান্ডারবোল্টে ঘটনাস্থলেই নিহত পাঁচজন হলেন-রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।

জীবিত অভিযুক্ত আটজনের মধ্যে কারাগারে আছেন ছয়জন। তারা হলেন- রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ ।  

এছাড়া পলাতক দুই আসামি হচ্ছেন শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামসহ অন্যরাহামলার পরদিন সকালে হলি আর্টিজান বেকারি থেকে গ্রেফতার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমের নাম অভিযোগপত্রে আসেনি। হলি আর্টিজানে জিম্মিসংকট তৈরির পর হাসনাতকে ওই রেস্তোরাঁর ছাদে জঙ্গিদের সঙ্গে আলাপরত অবস্থায় দেখা যায়, এমন একটি ছবিও দেখা যায় সংবাদমাধ্যমে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, চার্জশিটে ২১১ জনের সাক্ষ্য রয়েছে। এর মধ্যে অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৪৯ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া ১৭ জন রয়েছেন।

সোমবার চার্জশিটের একটি খসড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে চার্জশিট পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালানো হয়। এতে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা।

এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। গ্রেনেড হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ নিহত হন।

পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। অভিযানে অংশ নেওয়া পাঁচ জঙ্গির সবাই নিহত হয়।

হলি আর্টিজান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরীকে।  ২০১৬ সালের ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গিবিরোধী এক অভিযানে দুই সহযোগীসহ নিহত হন তামিম। রায়হান কবির তারেক ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে আট সহযোগীসহ নিহত হন।

সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর মিরপুরের রূপনগরে সিটিটিসি’র জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হন। হামলাকারীদের আশ্রয়দাতা তানভীর কাদেরী ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরে এক অভিযানে নিহত হন। হামলার পরিকল্পনায় অন্যতম সহযোগী সরোয়ার জাহান মানিক ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযান চলাকালে পালাতে গিয়ে পাঁচ তলা থেকে নিচে পড়ে নিহত হন।

নুরুল ইসলাম মারজান ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় সিটিটিসি ইউনিটের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক সহযোগীসহ নিহত হন। বাশারুজ্জামান ওরফে চকোলেট ও  মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সিটিটিসি’র অভিযানে নিহত হন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৮
পিএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।