তবে দেশের একেক এলাকায় একেক নামে নানা ধরনের মেলা হয়ে থাকে। ‘বসনবুড়ির মেলাও’ তেমন একটি নাম।
তবে এ মেলা বসা নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে গ্রামবাসী দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এতে একই ইউনিয়নের কামারপাড়া এলাকায় অনুরুপ মেলা বসে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
বাংলা সনের প্রত্যেক বছরের শ্রাবণ মাসের প্রথম রোববার এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলার প্রধান আকর্ষণ হলো মহিষ কাটা বা জবাই করা। এ মহিষকে ঘিরেই প্রায় ২শ’ বছর ধরে বড়পাথার বালিয়াদীঘি এলাকায় বসনবুড়ির মেলা হয়ে আসছে। একদিনের এ মেলায় মহিষের মাংস কিনতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারও মানুষ ছুটে আসেন।
আব্দুল জব্বাব, মফিজ উদ্দিন, বেনার আলীসহ বেশ কয়েকজন প্রবীণ বাংলানিউজকে জানান, প্রায় দু’শ বছর ধরে এখানে মেলাটি হয়ে আসছে। তখনকার দিনে এ এলাকায় সিংহভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করতেন। ওই সময় ভয়াবহ বসন্ত রোগ দেখা দেয়। তখন রোগ থেকে মুক্তি পেতে বসনবুড়ির নামে মহিষ জবাই করে পুজা দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়। মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন শুরু করলেও কালের বির্বতনে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনও এ মেলার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
তারা আরও জানান, সময়ের ব্যবধানে মেলাটি তার জৌলুস হারাচ্ছে। একটি সময় এ মেলায় বিপুল সংখ্যক মহিষ কাটা হতো। প্রসিদ্ধ খাবার খেসারি কলাইয়ের সমন্বয়ে তৈরি করা হতো বন্দিয়া। মেলায় আসা মানুষ মহিষের মাংস কিনতেন।
বড়পাথার ইয়াংস্টার স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বড়পাথার ইয়াংস্টার স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি সুদিপ্ত শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, এবার মেলায় ৫০টির অধিক মহিষ জবাই করা হয়েছে। সু-শৃঙ্খল অবস্থা বজায় রাখতে মেলা তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে মাংস, খাবার ও বিনোদন রয়েছে।
ধুনট থেকে আসা কসাই আমিনুর, বগুড়া শহরের কলোনীর দুলাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তারা মেলায় ২-৩টি করে বড় আকারের মহিষ জবাই করেছেন। এসব মহিষের মাংস ৪৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। দাম সামান্য বেশি হলেও মানের কারণে ক্রেতারা চাহিদামত কিনছেন।
শাহিনুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, শাহ আলমসহ মেলায় আসা একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, মেলায় এসে তারা বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী কিনেছেন। খাবার খেয়েছেন। চাহিদামত মাংস কিনে বাড়ি ফিরেছেন। তবে এবার মাংসের দাম বেশি বলেও অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৮
এমবিএইচ/ওএইচ/