ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্বপন হত্যায় রত্না-মামুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
স্বপন হত্যায় রত্না-মামুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের আলোচিত কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার রত্মা রানী চক্রবর্তী ও আবদুল্লাহ আল মোল্লা মামুন। 

বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে রত্মা ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মহসীনের আদালতে আবদুল্লাহ আল মোল্লা মামুনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।  

নিহত স্বপন কুমার সাহা নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ কাচারি গলি এলাকার মৃত সোনাতন চন্দ্র সাহার ছেলে।

রত্মা আদালতকে জানান, ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর বাজার কাজী বাড়ির প্রবাসী আজহারুল ইসলামের চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় রত্মা রানী চক্রবর্তীর ফ্ল্যাট বাসায় স্বপনকে পিছন থেকে শিল নোড়া দিয়ে আঘাত করেন রত্মা ও পিন্টু। পরে অচেতন অবস্থায় টয়লেটে নিয়ে মরদেহ সাত টুকরো করেন। ব্যাগে ভরে স্বপনের দেহ অংশগুলো পিন্টু ঠাণ্ডা মাথায় ভবনের পাশে খালি স্থানে রাখেন। পরে সুযোগ বুঝে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন পিন্টু।

স্বপন হত্যায় গত ১৫ জুলাই রাতে মাসদাইর এলাকা থেকে গ্রেফতার হন মামুন ও পিন্টুর বান্ধবী হিসেবে পরিচিত রত্মা। ১৮ জুলাই রাতে রত্মা ও রিমান্ডে থাকা পিন্টুকে নিয়ে মাসদাইরে রত্মা যে বাড়িতে থাকেন সেই বাড়িতে যায় ডিবি পুলিশের একটি টিম। পরে ওই ফ্ল্যাট থেকে স্বপন কুমার সাহাকে হত্যার জন্য ব্যবহৃত শিল নোড়া, বটি, রক্তমাখা বিছানা চাদর ও তোষক উদ্ধার করা হয়।

এর আগে স্বপনের বড় ভাই অজিত কুমার সাহা জানান, স্বপন কুমার সাহা ছিলেন খুচরো কাপড় ব্যবসায়ী। ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। গত ৯ জুলাই ঘাতক বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী পিন্টুর ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের পর পিন্টুর প্রতি আমাদের সন্দেহ বাড়ে। পরে ১৫ জুলাই বিষয়টি ডিবিকে জানালে রিমান্ডে থাকা পিন্টুর সহযোগী বাপান ভৌমিক বাবু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন।  

তখন পিন্টু দেবনাথের এক বান্ধবী রত্মা রানী চক্রবর্তীর সন্ধান দেন। তার মোবাইল নম্বর পর্যালোচনা করে জানা যায় স্বপনের মোবাইলটি রত্মা ব্যবহার করছেন। ১৫ জুলাই রোববার রাতে তাকে আটকের পর তার কাছ থেকে স্বপনের ব্যবহৃত দু’টি মোবাইল উদ্ধার করে। মূলত পিন্টুর টাকা নিয়ে স্বপন ভারতে একটি ফ্ল্যাট বাসা কেনেন। ওই ফ্ল্যাট বাসা পিন্টুকে না দিয়ে বরং উল্টো হুমকি দিচ্ছিলেন স্বপন। এসব কারণেই ২০১৬ সালের মার্চে আমলাপাড়া এলাকার মোল্লা মামুন নিজেই পিন্টুকে হুমকি দিতেন। তখন থেকেই স্বপন সাহা ও প্রবীর ঘোষকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে পিন্টু। পরে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর স্বপনকে ডেকে নেন পিন্টু। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন।  

স্বপন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার রত্মা ও মামুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রত্মার ফ্ল্যাট থেকে হত্যার জন্য ব্যবহৃত শিল নোড়া, বটি, রক্তমাখা বিছানা চাদর ও তোষক উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন হত্যাকাণ্ডে স্বর্ণ ব্যবসায়ী পিন্টু ও তার সহকারী বাপানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ