রহমতউল্লাহর পরিচিত মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা ওরফে আফরিন ওরফে আন্নাফিও তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় অভিনয় করেছেন। রহমতউল্লাহর সঙ্গে আফরিনের মাঝেমাঝে যোগাযোগ হতো।
রহমতউল্লাহ ওই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পুলিশ বন্ধু মামুনকেও যাওয়ার অনুরোধ করেন। আর সেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েই খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা মামুন।
বুধবার (১৮ জুলাই) দিনগত রাতে রাজধানীর বাড্ডা ও হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতাররা হলেন মিজান শেখ, মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা ওরফে আফরিন ওরফে আন্নাফি, সুরাইয়া আক্তার ওরফে কেয়া, ফারিয়া বিনতে মীম।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
আব্দুল বাতেন জানান, ঘটনার দিন রহমতউল্লাহ তার গাড়ি নিয়ে আফরিনের ঠিকানা অনুযায়ী বনানীর বাসায় যান এবং মামুন মোটরসাইকেল নিয়ে ওই বাসায় যান। এর কিছুক্ষণ পর স্বপন, মিজান, দিদার, আতিক বাসায় ঢুকে তারা অপকর্মে লিপ্ত বলে অভিযোগ করেন। তখন মামুন নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে রহমতউল্লাহ ও মামুনকে বেঁধে মারধর শুরু করে।
‘রহমতউল্লাহকে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করা তাদের টার্গেট ছিল। কিন্তু মামুন নিজেকে পুলিশ পরিচয় দেওয়ায় তাদের টার্গেট মামুনের দিকে চলে যায়। মারধরের একপর্যায়ে মধ্যরাতে মামুন মারা যায়। এতে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং রহমতউল্লাহর বাঁধন খুলে দেন। রহমতউল্লাহ মামুনকে ডেকে আনায় এ ঘটনায় তিনিও ফেঁসে যাবেন ভেবে রহমতউল্লাহও তাদের সঙ্গে মিলে যান’।
‘পরদিন সকালে মামুনের মরদেহ বস্তায় করে তারা রহমতউল্লাহর গাড়িতে ওঠান। এদের মধ্যে স্বপন, দিদার ও আতিক সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে। তারা গাড়ি নিয়ে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্টে যান এবং খাওয়া-দাওয়া করেন। মিজান মরদেহটি পুড়িয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন এবং ক্যান্টনমেন্টের একটি পাম্প থেকে পেট্রোল কেনেন।
‘সন্ধ্যার দিকে তারা গাড়ি নিয়ে কালীগঞ্জের দিকে যান। এরপর জঙ্গলে লাশ নামিয়ে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। পরে তারা রহমতউল্লাহকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন। গত ১০ জুলাই বাসায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে রহমতউল্লাহকে গ্রেফতার করে ডিবি। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার তিন নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়’।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, তারা বনানীর ওই বাসাটি দুই মাস আগে ভাড়া নিয়েছিল। মানুষকে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করাই তাদের লক্ষ্য ছিল। আর তাদের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন রবিউল। ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল নজরুল নামের একজন। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নজরুলের সম্পৃক্ততা কেউ স্বীকার করেনি।
এ ঘটনায় জড়িত অন্তত আরও চারজনের বিস্তারিত নাম পরিচয় পাওয়া গিয়েছে, যাদেরকে খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন ডিবির ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
পিএম/এনএইচটি