ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৩০ লাখ শহীদ স্মরণে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮
৩০ লাখ শহীদ স্মরণে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো

ঢাকা: মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ বীর শহীদের স্মরণে দেশজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বুধবার (১৮ জুলাই) জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এর উদ্বোধন করেন তিনি।  

এ বছরই প্রথম জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৮ এর এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ বীর শহীদের স্মরণে সারাদেশে একযোগে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে।

দেশজুড়ে বিভিন্ন উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন তো রয়েছেই।  

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সামাজিক বনায়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে নারীর ক্ষমতায়ন, নেতৃত্ব সৃষ্টি, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্য নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।  

‘সামাজিক বনায়নের আওতায় ১৯৮১-১৯৮২ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত প্রায় ৮৪ হাজার ৩৭৮ হেক্টর এবং ৬৮ হাজার ৮৩০ কিলোমিটার ভূমিতে বাগান করা হয়েছে। এই বাগানে ৬ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৫ জন উপকারভোগী সম্পৃক্ত রয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী উপকারভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ২১ হাজার ৫০৭ জন। ’

সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে এ পর্যন্ত রাজস্ব আয়ের পরিমাণ প্রায় ৩৩১ কোটি ৮ লাখ ৭৯ হাজার ২৫৬ টাকা বলে জানান তিনি।  

বনভূমি সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বনভূমি সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের ব্যাপক প্রসার ঘটাতে আমরা নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। একদিকে পরিবেশ দূষণ হ্রাস করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে; অন্যদিকে বৃক্ষরোপণ ও বনাঞ্চল সৃষ্টির মাধ্যমে বিরূপ আবহাওয়া মোকাবেলা এবং গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।  

প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্লাস্টিকের অপঁচনশীলতার জন্য প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানসমুহ চলাচলে বাঁধা প্রদান করে মাটির গুণগত মান হ্রাস করে। প্লাস্টিক দূষণ বর্ষাকালে শহরগুলোতে নর্দমা এবং খালসমূহে পানি প্রবাহে বাঁধার ফলে মাত্রাতিরিক্ত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে।

পাটের তৈরি বিকল্প ব্যাগ ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সরকার বিকল্প হিসেবে কাগজ এবং পাটের তৈরি বিকল্প ব্যাগ ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে।  

‘দেশীয় বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত পাটের পলিমার হতে প্রস্তুত পঁচনশীল সোনালী ব্যাগ বর্তমানে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করছি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নে আমাদের তেমন ভূমিকা নেই। কিন্তু বাংলাদেশেকে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।  

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয় মোকাবেলার জন্য ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করেছে। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও আমাদের এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

পরিবেশ রক্ষায় অনুষ্ঠানে সবাইকে বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আসুন, আমরা প্রত্যেকে অন্তত একটি করে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করি এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ নির্মাণে এগিয়ে যাই।  

অনুষ্ঠানে পরিবেশ পদক-২০১৮ এর জন্য নির্বাচিত সংস্থা ও বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন-২০১৮, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৭ ও সামাজিক বনায়নের লভ্যাংশের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।  

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

এদিকে অনুষ্ঠানে ‘সবুজে বাঁচি, সবুজ বাঁচাই, নগর-প্রাণ-প্রকৃতি সাজাই’ স্লোগানে এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮
এএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad