ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মৌসুমি বায়ু দুর্বল, বর্ষার বর্ষণ নেই

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮
মৌসুমি বায়ু দুর্বল, বর্ষার বর্ষণ নেই বৃষ্টিতে গায়ে প্লাস্টিক মুড়ি দিয়ে পথ চলার এ চিত্র গতবছরের

ঢাকা: আবহাওয়ার গতি প্রকৃতি অনুযায়ী বর্ষাকাল শুরু হলেও বর্ষা আসলে আসেনি। মৌসুমি বায়ু এবার বেশিরভাগ সময় দুর্বল থাকার কারণেই বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। যা বাড়বে আরো সপ্তাহখানেক পর। ফলে আমন চাষে কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। তবে এ সমস্যা কেটে যাবে শিগগিরই।

বাংলানিউজের প্রতিনিধিদের পাঠানো বিভিন্ন জেলার খবর বলছে, কৃষকরা এরইমধ্যে আমনের জমি প্রস্তুত করা শুরু করেছেন। কিন্তু বর্ষণ তেমন না হওয়ায় তাদের ভরসা রাখতে হচ্ছে সেচের ওপর।

কৃষিবিদরা বলছেন, এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আমন চাষে প্রভাব পড়বে।
 
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবর রহমান বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি নেই। এই অবস্থা যদি আরও ১০-১৫ দিন চলতে থাকে তবে আমনের উপর অবশ্যই প্রভাব পড়বে। আমন চাষে লক্ষ্যমাত্র পূরণ হবে না।
 
তবে আবহাওয়া অফিস কৃষক এবং কৃষিবিদদের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছে, আগামী ২০-২১ জুলাইয়ের দিকে বৃষ্টিপাত বাড়বে। আমন চাষে তেমন সমস্যা হবে না।
 
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্ষাটা আসলে থাকে জুলাই-আগস্টজুড়ে। বর্ষাকাল শুরু হলেও বর্ষণ স্বাভাবিকের চেয়ে এখন পর্যন্ত কম। আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে বর্ষণ কিছুটা বাড়বে। ফলে আমন চাষে তেমন প্রভাব পড়বে না। আগস্টে বন্যার সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে।
 
আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এক বছর বৃষ্টিপাত বেশি হলে পরের বছর কিছুটা কম হয়। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবার কিছুটা কম হচ্ছে। এমনকি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বর্ষণ কম হচ্ছে।
 
মৌসুমি বায়ু শক্তিশালীভাবে সক্রিয় থাকলে বর্ষণ বেশি হয়। আর দুর্বল থাকলে বৃষ্টিপাত কম হয়। এবার মৌসুমি বায়ু বেশিরভাগ সময় দুর্বল অবস্থায় বিরাজ করছে। তাই বর্ষাকাল শুরু হলেও বৃষ্টিপাত এখনো তেমন হচ্ছে না। বৃষ্টিপাত এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে কম।
 
আগামী ২০-২১ জুলাইয়ের দিকে বৃষ্টিপাত বাড়বে। আমন চাষ নিয়ে চিন্তার তেমন কারণ নেই। বৃষ্টিপাত দু’দিন থেকে কিছুটা বেড়েছে।
 
আবহাওয়া অধিদফতর এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা উপকূল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে ঝাড়খণ্ড এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। যার প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, সুষ্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে।
 
এই অবস্থায় সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোতে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
 
আবহাওয়ার এই অবস্থানে কারণে বুধবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। আগামী পাঁচদিনের বজ্রসহ বৃষ্টিপাত বাড়বে।
 
মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ ১২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে সন্দ্বীপে।
 
এদিকে বৃষ্টিপাত কম হলেও বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি বিরাজ করছে। তাই বাতাস বেশি থাকলেও গরম অনুভূত হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।