ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বরিশালে পুলিশ মারধরের ঘটনায় মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮
বরিশালে পুলিশ মারধরের ঘটনায় মামলা সুন্দরবন-১১ লঞ্চে ঘটেছিল পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা

বরিশাল: বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) এর স্টাফ অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম, কমিশনারের দেহরক্ষী কনস্টেবল হাসিব ও বিএমপির মিডিয়া বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল ওবায়েদকে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি পাওয়া না গেলেও মামলা দায়েরের বিষয়টি মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) দুপুরে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন বিএমপি কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাহফুজুর রহমান। কোতোয়ালী মডেল থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিজাম মাহমুদ ফকিরের দায়ের করা মামলাটির তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অবশ্য পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরা হতে পারে।  

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুলাই রাতে বরিশাল নদীবন্দরে সুন্দরবন-১১ লঞ্চের ভিআইপি লাউঞ্জে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মেদ ও প্রাধনমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসানকে বিদায় জানানোর জন্য যান  বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি ও বিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার।

এসময় তারা লঞ্চের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেই অনেক লোকজনের অবস্থান দেখতে পান। এরমধ্যে হাতে অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তিকে সোফার ওপরে বসে থাকতেও দেখা যায়।  

তখন ডিআইজি ও ভারপ্রাপ্ত কমিশনার তাদের পরিচয় দেন এবং সে লাউঞ্জে উপস্থিত ভিআইপি যাত্রী ছাড়া অন্যদের অন্যত্র যেতে অনুরোধ করেন।

বরিশালে নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান থাকায় তখন বিএমপি কমিশনারের স্টাফ অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার দুই সচিবের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তিকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেখানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু অস্ত্রধারী তার অস্ত্রের লাইসেন্স দেখাতে ও নিজের পরিচয় দিতে অসম্মতি প্রকাশ করলে বিএমপি কমিশনারের দেহরক্ষী কনস্টেবল হাসিব তাকে ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে যেতে অনুরোধ করেন।  

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অস্ত্রধারীর সঙ্গে থাকা সৈকত ইমরান নামে এক ব্যক্তি বিএমপি কমিশনারের দেহরক্ষীর সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এক পর্যায়ে অস্ত্রধারী ও সৈকত ইমরান উত্তেজিত হয়ে কনস্টেবল হাসিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে পথরোধ করে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করলে তাকেও মারধর করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা নিজেদের পরিচয় দিয়ে সরকারি নিরাপত্তার কাজে আসার কথা জানালেও তাদের ওপর হামলা অব্যাহত থাকে।

একপর্যায়ে অস্ত্রধারী ব্যক্তি তার অস্ত্র দিয়ে জাহিদুল ইসলাম ও হাসিবকে হত্যার উদ্দেশে গুলি করতে উদ্যত হয়। এমনকি জাহিদুল ইসলামকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। তখন বিএমপির মিডিয়া বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল ওবায়েদ ঘটনার ছবি তুলতে চাইলে তাকে মারপিট করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং তাকেও গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে সেই দু’জন।

এক পর্যায়ে বিএমপি কমিশনার কন্ট্রোল রুমে জানালে মামলার বাদী উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিজাম মাহমুদ ফকিরসহ কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ), কোতোয়ালী মডেল থানার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তবে এর আগেই অস্ত্রধারী ব্যক্তি ও সৈকত ইমরান তাদের সহযোগীদের নিয়ে ভিআইপি লাউঞ্জ ত্যাগ করে।

ঘটনার সময় দুই সচিব লঞ্চে অবস্থান করলেও ভিআইপি লাউঞ্জে ঢুকতে পারছিলেন না। পরে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা উভয় সচিবকে ভিআইপ লাউঞ্জে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় ১৫ জুলাই বিএমপির কোতোয়ালী মডেল থানায় এসআই নিজাম মাহমুদ ফকির নামধারী সৈকত ইমরানসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে ১৪৩/৩৪২/১৮৬/৩৫৩/৩৩২/৩৩৩/৩০৭ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।