ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লার্ভা ধ্বংস দেখছেন না নগরবাসী, সফলতার দাবি ডিএসসিসির

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২১ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৮
লার্ভা ধ্বংস দেখছেন না নগরবাসী, সফলতার দাবি ডিএসসিসির লার্ভা নষ্ট করতে ডিএসসিসি’র অভিযান (ফাইল ছবি)

ঢাকা: রাজধানীবাসীর জন্য ডেঙ্গুরোগ পরিচিত হলে চিকুনগুনিয়া খুব বেশি জানা শোনা ছিল না। তবে গত বছর রাজধানীবাসীকে যেভাবে চিকুনগুনিয়া ভুগিয়েছে তাতে সহজেই ভুলার কথা নয়। 

এ নিয়ে দু’সিটি করপোরেশনের মেয়র কাহিল অবস্থায় পড়ে যান। সমালোচনাও কম হয়নি।

তাই তো এবার আগে থেকেই আটঘাঁট বেঁধে মাঠে নামার ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।  

গত ২৫ জুন ধানমণ্ডির সাতমসজিদ এলাকায় পক্ষকাল ব্যাপী বিশেষ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মেয়র।

 লার্ভা নষ্ট করতে ডিএসসিসি’র কর্মসূচির উদ্বোধন (ফাইল ছবি)
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়রের ঘোষণা ছিল ডিএসসিসি অধিভুক্ত ৫৭টি ওয়ার্ডের প্রতি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ১শটি বাড়িতে বিশেষ এই অভিযান চলানো হবে। শর্ত ছিল যদি বাসার মালিক অনুমতি দেন তাহলেই কেবল সেই বাসায় ঢুকে ডেঙ্গুর জীবাণু ধ্বংস করে দেওয়া হবে পাশাপাশি তাদের শিখিয়ে দেবে কীভাবে তা ধ্বংস করতে হয়।
 
গত ২৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত এই ২০ দিনে আদৌ কোনো এলাকায় অভিযান হয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান নগরবাসী।  

ডিএসসিসি এলাকার অন্তত পাঁচজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ডিএসসিসির মশার জীবাণু ধ্বংসকারী টিম দূরের কথা ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানোই চোখে পড়েনি।
 
৪৮ এর ওয়েস্ট ধানমণ্ডি এলাকার বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার কাজী শামসুল হকের স্ত্রী মিসেস ফেরদৌসী বাংলানিউজকে বলেন ‘আমার চোখে অন্তত পড়েনি যে কেউ মশার ওষুধ ছিটিয়েছেন। কাউকেও দেখিনি। ’
 
খিলগাঁও সিপাইবাগ এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ডেঙ্গুর জীবাণু ধ্বংসের কার্যক্রম গত দুই মাসেও চোখে পড়েনি। তবে শুনেছি শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করবে। আসলে করবে কিনা কে জানে?
 
গোপীবাগ ফোর্থ লেন গলির সেবিকা দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এলাকায় মশার উপদ্রব অনেক বেশি। মাঝে মধ্যে সিটি করপোরেশনের লোককে ফগার মেশিন নিয়ে ঘুরতে দেখি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় বলে মনে হয় না। কেননা ফগিং করার পরেই আবার একই অবস্থা। আসলে মেশিনে ওষুধ থাকে কিনা সেটাই কে বলবে।  
 
গত ২৫ জুন পক্ষকাল ব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণার সময় মেয়র বলেছিলেন, আমাদের টিম বাড়ির মালিকের অনুমতি নিয়ে বাসায় বাসায় যাবেন। যে বাড়িতে এডিশ মশার লার্ভা বা প্রজনন ক্ষেত্র পাওয়া যাবে তা ধ্বংস করে দিয়ে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংসের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসবেন।
 
তিনি আরও বলেছিলেন গতবছর আমাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি ছিল তারপরেও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে আমাদের চেষ্টার কমতি ছিল না। তাই এবার গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। এবারও কোনো নাগরিক যেন সেই কষ্ট লাঘব করতে না হয় সেজন্য ডিএসসিসি সর্তক রয়েছে।
 
এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগ্রে. জে. শেখ সালাউদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আজই আমাদের ১৫ দিনের কর্মসূচি শেষ করলাম। আমাদের টার্গেট ছিল ৫৭টি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৫ হাজার ৭শ বাড়িতে টিম যাবে। আমরা আশা করি তার চাইতেও বেশি বাড়িতে আমাদের টিম গেছে।  এই মুহুর্তে সঠিক পরিসংখ্যান বলা যাবে না। প্রতিটি ওয়ার্ডের পরিসংখ্যান যখন পাওয়া যাবে তখন সংখ্যাটি বলা সহজ হবে।
 
নগরবাসীর অভিযোগ তাদের বাড়িতে সিটি করপোরেশনের টিম যাইনি এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা বলিও নাই সব বাড়িতে যাবো। আসলে স্থানীয় কাউন্সিলর ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ডিএসসিসির টিম কাজ করেছে তারা যেবাড়িতে মনে করেছেন সেখানেই গেছে টিম।
 
কতগুলো বাসায় ডেঙ্গুর জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে জানতে চাইলে বলেন, সঠিক পরিসংখ্যান বলা মুশকিল তবে অনেক বাসাতেই পাওয়া গেছে।
 
অন্যদিকে ধানমণ্ডি এলাকার অর্থাৎ ১৫ ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের টিম অধিকাংশ বাড়িতেই গেছে। আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়েছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৮
এসএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।