ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পাল্টা আক্রমণ নজিরবিহীন

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৮
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পাল্টা আক্রমণ নজিরবিহীন মানববন্ধনে অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে একটি পক্ষের পাল্টা আক্রমণকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী।

রোববার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক, আন্তার্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তানজীমউদ্দীন খান প্রমুখ।

রুশাদ ফরিদী বলেন, এটা কেমন কথা হল শহীদ মিনারে সাধারণ ছাত্ররা এসে দাঁড়িয়েছে, শিক্ষকরা কথা বলছে এর মাঝখানে মাইকে এনে বলা হচ্ছে এখানে জামায়াত-শিবিরের ইন্ধন আছে। কি বিশ্ববিদ্যালয় এটা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি করে? এটা খুবই আপত্তিকর। বিশ্ববিদ্যালয়কে এই পর্যায়ে নিয়ে আসাটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। শিক্ষক-ছাত্রদের কর্মসূচি এভাবে পাল্টা আক্রমণ করাটা নজিরবিহীন। এই মুহূর্তে ঢাবির ছাত্ররা গ্রেফতার ও রিমান্ডে আছে। তাদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত যতই মহড়া দেওয়া হোক, ছাত্র-ছাত্রী ভাড়া করে আন্দোলন করা হোক আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

ফাহমিদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি যৌক্তিক। এটা দেশ বিদেশের অনেকে সমর্থন দিয়েছে। আমরা যখন মনে করেছি এই দাবিগুলো যৌক্তিক, তখন আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এ রকম দাবি তুলতে পারে। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। গণতান্ত্রিক উপায়ে যারা দাবি জানাচ্ছেন তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। এজন্য আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমি আশা করবো শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ এবং দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি হবে।

সমাজকর্মী রাখাল রাহা বলেন, হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা না দিয়ে বের করাটা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়।

তানজীমউদ্দীন খান বলেন, একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রচনা হল। এর দায় দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। আমরা সাধারণকে রক্ষা করতে চাই। বাংলাদেশের ইতিহাস সাধারণদের রক্ষা করার ইতিহাস। এই বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় সাধারণ মানুষের পক্ষে। এই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসম্মুখে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আজকে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে কিন্তু তাদের রক্ষা করা দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রক্টরিয়াল টিম পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন শুরু হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তানভীর হাসান সৈকতের নেতৃত্ব আরেকটি পক্ষ ক্যাম্পাসে অরাজকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে দাবি করে মানববন্ধন করেন। শিকক্ষকরা বক্তব্য রাখার সময় মাইক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের উস্কানিমূলক কথা বলা হয়। এ সময় শহীদ মিনারে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা মানববন্ধনের পর সোয়া ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে জাতীয় সংগীত পরিবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীরা সাড়ে ১২টার দিকে একটি মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এলে হামলার শিকার হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৮
এসকেবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।