ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও বিল, ঘটনা তদন্তে ইউএনও 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৮
বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও বিল, ঘটনা তদন্তে ইউএনও  ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন ইউএনও। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও ২ লাখ টাকা বিলের ঘটনা তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান।

শুক্রবার (১৩ জুলাই) বিকেলে উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশ্বহর গ্রামে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ইউএনও।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জুলাই দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজে “বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও ২ লাখ টাকা বিল” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখে জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে ইউএনওকে নির্দেশনা দেন।

সেই নির্দেশনা অনুযায়ী পলাশী ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ইউএনও আসাদুজ্জামান। এসময় ভুক্তভোগী প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ওই গ্রামে বিদ্যুতের কোনো খুঁটি বা লাইন নেই সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখেন।  

ভুয়া এসব বিল মওকুফ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। কীভাবে এসব ভুয়া বিল তাদের নামে চলে এসেছে সে বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তাকে বিস্তারিত জানিয়ে এ থেকে পরিত্রাণের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, মহিষাশ্বহর গ্রামের বিদ্যুতহীন ৩৩ পরিবার বিদ্যুতের সংযোগের জন্য গত তিন বছর আগে আবেদন করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কালীগঞ্জ শাখায়। আবেদনের পর স্থানীয় বিদ্যুতের দালাল সাইফুল ইসলাম প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে মিটার প্রতিটি ১২/১৫ হাজার টাকা বুঝে নেন এবং তিন মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তিন বছর তিন মাস অতিবাহিত হলেও খুঁটি, লাইন বা মিটার কোনোটাই মেলেনি তাদের ভাগ্যে।  

এরই মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বেসরকারি খাতে চলে যায় এবং বিধি মতে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় তাদের নতুন সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতেই বিপাকে পড়েন বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা ও দালাল চক্রটি।

এদিকে গ্রাহকদের চাপের মুখে গত বছর ওই গ্রামের ৩৩টি পরিবারের জন্য ৩৩টি মিটার পাঠান দালাল সাইফুল ইসলাম। খুঁটি বা লাইন না পেয়ে গ্রাহকরা মিটারগুলো বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরই মধ্যে গত জুন মাসে ওই গ্রামের ৪৩টি পরিবারের নামে জনপ্রতি ৫ হাজার ৯৩ টাকা হারে দুই লাখ ১৮ হাজার ৯৯৯ টাকার বিদ্যুৎ বিল পাঠায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নেসকো।  

বিদ্যুৎ বিল দেখে হতভম্ভ পরিবারগুলো বিলের কাগজপত্র নিয়ে কালীগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিস গিয়ে এর সমাধান দাবি করলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই এসব ভুয়া বিল বাতিল করে দ্রুত লাইন সংযোগ করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে গত ১০ জুলাই বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।

তদন্ত শেষে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সরেজমিনে ঘুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। এ প্রতিবেদন রোববার (১৫ জুলাই) জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। সেখানে ভুক্তভোগীদের দাবিগুলো তুলে ধরা হবে।  

সত্য ও সঠিক তথ্য তুলে ধরে জনস্বার্থে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় বাংলানিউজ কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

** বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও ২ লাখ টাকা বিল! 

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।