ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বরিশালে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৮
বরিশালে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বরিশালে প্রার্থীদের মাইকে প্রচারণা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: প্রতীক বরাদ্দের পর এবার প্রচার-প্রচারণায় মেতে ওঠেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছয় মেয়র ও ১২৫ কাউন্সিলর প্রার্থী। এরই মধ্যে ভোটের মাঠে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তবে ক্ষমতাসীন দলসহ অন্যান্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী। 

মঙ্গলবার (১০ জুলাই) নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কার্যক্রম শুরু হয়। বুধবার (১১ জুলাই) সকাল থেকেই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে  ভোট প্রার্থনা করছেন; আর তুলে ধরছেন নগর উন্নয়নে নিজ নিজ ফিরিস্তি।

গণসংযোগে যোগ দিয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় নেতাকর্মী ও কর্মী-সমর্থকরা।  

সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার নগরের হাসপাতাল রোডের জেলখানা মোড় থেকে সদর রোডে গণসংযোগ করেন। এ সময় হ্যান্ড মাইক দিয়ে কর্মীদের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।  

প্রার্থীর সঙ্গে বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁন, উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলানিউজকে মজিবুর রহমান সরওয়ার বলেন, নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি অনুযায়ী মিছিল করা যাবে না। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার ও আজ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঠিকই মিছিল করেছেন। কিন্তু এতে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।  

তিনি বলেন, গাজীপুরে যেভাবে সরকার দলীয় লোকজন নির্বাচন করেছে, সেভাবে নির্বাচনের চিন্তা-ভাবনা বরিশালে করছে বলেও শুনেছি। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জনগণের মধ্যেও ঐক্য থাকা উচিত।  

সুষ্ঠু ভোট হলে ধানের শীষ প্রতীক বিজয়ী হবে- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে মজিবর রহমান সরওয়ার বলেন, আমরা এর আগেও বরিশালের উন্নয়ন করেছি, নির্বাচিত হলে আরো উন্নয়ন করবো। মানুষের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।

এদিকে বেলা ১১টায় নগরের মল্লিক রোডে দিনের প্রথম প্রচারণা চালান আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীরসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, সামনে আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে নির্বাচনকে সামনে রেখে সিটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আমরা চাই না। নির্বাচন সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশেই হবে। প্রার্থীরা যে যার মতো প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তির খবর আমার জানা নেই, এমনকি এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগও নেই। যদি কিছু হতো তবে সাংবাদিকরাই আগে জানতেন।  

তিনি বলেন, আমি শুরু থেকেই বলে আসছি, আমার কোনো নির্বাচনী ইশতেহার নেই, বরিশালের মানুষের চাওয়া-পাওয়াই আমার ইশতেহার।  আর আমি কারো বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করতে চাই না।  

সাদিক আবদুল্লাহর ভাষ্যমতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলের যে উন্নয়ন করেছেন তাতে আগামী ৩০ তারিখের (৩০ জুলাই) নির্বাচনে বরিশালের মানুষ নৌকা মার্কার প্রার্থীকে স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।  

এদিকে নগরের রসুলপুর কলোনিতে গণসোযগ চালিয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন (তাপস)। এসময় তার সঙ্গে জেলা জাপার সভাপতি মহসিন উল ইসলাম হাবুলসহ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

আর সকাল ১০টায় বাসদ প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী (মই প্রতীক) নেতা-কর্মীদের নিয়ে ফকিরবাড়ির দলীয় কার্যালয় থেকে সদর রোডে প্রচারণায় নামেন। প্রায় একই সময়ে গণসংযোগ শুরু করেন সিপিবি’র কাস্তে মার্কার প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ।  

নির্বাচনী প্রচারণায় দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকের ব্যবহার বেঁধে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার সকালে সিপিবির মেয়র প্রার্থীকেও রিকশায় মাইকে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।  

অন্যান্য প্রার্থীরা সকাল থেকেই প্রচারণায় নামলেও বিকেলে সাগরদী বাজার থেকে দপদপিয়া ব্রিজ পর্যন্ত গণসংযোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব।  

এসময় তার সঙ্গে দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমসহ (চরমোনাই পীর) নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন খান জানান, প্রচারণার ক্ষেত্রে মিছিল করা যাবে না। পাশাপাশি মাইকে প্রচারণা চালাতেও নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো এধরনের  কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।

কেউ নির্দেশনা না মানলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৮
এমএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।