মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৭টি ভ্যালিতে একযোগে এই ভোটগ্রহণ চলছে। সারাদেশের ২২৮টি কেন্দ্রে মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ১২৫টি কেন্দ্রে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
রোববার (২৪ জুন) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। গোপন ব্যালটে ভোটগ্রহণ ও গণনার মাধ্যমে পঞ্চায়েত কমিটি, প্রাথমিক কার্যকরী পরিষদ, ভ্যালী কার্যকরী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গঠিত নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, দেশের পাঁচ জেলার ২০ উপজেলার ২২৮টি চা বাগানের ৭টি ভ্যালিতে এ ভোট শুরু হয়েছে। এতে ২২৮টি কেন্দ্রে ৩৪৩টি বুথ রয়েছে। বাগান ও ফাঁড়ি বাগানের মোট ৯৮ হাজার ৭৫২ জন চা শ্রমিক নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে ৫৩৬টি পঞ্চায়েত প্যানেলের মধ্যে ৩৫টি একক প্যানেল রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেয়নি পাঁচটি প্যানেল। যার ফলে ৫০১টি প্যানেলের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জানা যায়, গত ১০ জুন কেন্দ্রীয় পরিষদের প্রার্থীদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলী তিনটি প্যানেলকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক কার্যকরী পরিষদ ও ভ্যালি কার্যকরী পরিষদের জন্য ভোটাভোটি হবে।
মিরতিংগা চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা অন্যান্য জাতীয় নির্বাচনের মতো সুশৃঙ্খলভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। ভোটকেন্দ্রে আনসার ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
চা শ্রমিক গীতা ব্যানার্জি বাংলানিউজকে বলেন, ‘সব নির্বাচন থেকে এ নির্বাচন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পক্ষে কথা বলার জন্য আমরাই নেতা নির্বাচন করব। আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিচ্ছি। ’
এবারের নির্বাচনে চা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও সংগ্রাম কমিটি সমর্থিত দু’টি প্যানেলের পাশাপাশি মহাসংগ্রাম কমিটি নামে আরও একটি পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের চলমান চা শ্রমিক সংগ্রাম কমিটি মাখনলাল কর্মকার, জেসমিন আক্তার, পংকজ কন্দ ও বিশিষ্ট তাঁতীদের নিয়ে গঠিত তাদের সভাপতিমণ্ডলী প্যানেলের প্রতীক ‘দোয়াত কলম’। রামভজন কৈরী, নিপেন পাল, রেখা বাক্তি ও পরেশ কালিন্দির সভাপতিমণ্ডলীর প্যানেলে ‘ফুটবল’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর প্যানেলে বিজয় বুনার্জি, শোভা গোয়ালা, মো. সেলিম আহমদ ও রাজেশ নুনিয়া ‘ছাতা’ প্রতীক এবং সাধারণ সম্পাদকের প্যানেলে সিতারাম অলমিক, সুনিল কুমার মৃধা, সনকা তাঁতী ও দুলন কর্মকার দুলু ‘চেয়ার’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে মহাসংগ্রাম কমিটির মনোনীত সভাপতিমণ্ডলীর প্যানেলটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারায় তাদের পক্ষে সম্পাদকমণ্ডলীর হয়ে গীতা কানু, অনিক রুদ্রপাল, কবিতা তাঁতী ও তপন সাওতাঁল ‘কলস’ প্রতীক নিয়ে একাই লড়াই চালাচ্ছেন। সংগ্রাম কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর প্যানেল দাবি করে শ্রীধনী কুর্মী, মীনা পাশী, ছায়েদি মিয়া ও লছনা মাদ্রাজী পাশী ‘বাইসাইকেল’ নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন বলেও জানা যায়।
চা শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সভাপতিমণ্ডলী প্রার্থী পংকজ কন্দ বাংলানিউকজকে বলেন, শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। এটা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সংগঠন। এখানে সেই বিজয়ী হবে সমন্বিত প্রচেষ্টায় যিনি দশ লক্ষাধিক শ্রমিকের অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকবেন।
গঠিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব বিভাগীয় উপ-শ্রম পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৮
জিপি