ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ওভার ব্রিজ দিয়ে মিনিটে চলাচল করে সাড়ে ৫জন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৮ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৮
ওভার ব্রিজ দিয়ে মিনিটে চলাচল করে সাড়ে ৫জন ওভার ব্রিজ দিয়ে মিনিটে চলাচল করে সাড়ে ৫জন

ঢাকা: ব্রিজে উঠতে প্রথমে বাধার মুখে পড়তে হলো-চায়ের দোকানে চা পান-কারীদের। ওভারব্রিজের ঠিক নিচে পূর্ব-পশ্চিমের দুটি সিড়ির মাঝখানের এই দোকান, এতে তিনজন কর্মচারী কাজ করছিলেন। ফলে লোকজন এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছেন, যে সিঁড়িতে ওঠা যাচ্ছিল না।

শনিবার(২৩জুন) সকাল থেকেই বায়তুল মোকারমের উত্তর গেটের পাশের ওভার ব্রিজে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা গেছে। স্থানীয় দোকানদার ও পথচারীরা বলছেন, ব্রিজের দু’পাশেই চায়ের দোকান রয়েছে।

উত্তর গেট থেকে লোকজনের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হচ্ছে।

এক্সকিউজমি সাইট প্লিজ বলায়, দুজন লোক সামান্য একটু সরে দাঁড়ালেন। তারপর কোনো রকম পা ঢুকিয়ে, ধাক্কা-ধাক্কি করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠেই দেখা গেলো, পুরো ওভার ব্রিজটি ছেয়ে রয়েছে ‘ড্যান্ডি’র কগজ, বিড়ি-সিগারেটের টুকরা, ডাবের অবশিষ্ট অংশ আর প্লাস্টিকের বোতলে।

পথচারীদের রাস্তার মাঝে ঘুমাচ্ছে পথশিশুরা। ব্রিজটির উত্তর দিকে ময়লা আর দুর্গন্ধ। অন্যদিকে পুরো পথ-শিশুরা দল বেঁধে ড্যান্ডি সেবন(নেশা) করছে।

তারা বলেন, দিন-রাত বলে কিছু নেই, সব সময় এই ব্রিজটি অপরিষ্কার থাকে। এ রাস্তাটি মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে নিরাপত্তাহীনতার কারণে নারী ও শিশুরা ওভার ব্রিজ দিয়ে পারাপার হন না।

স্ব-পরিবারে ওভারব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় আহমদ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, নিচের রাস্তা দিয়ে পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ ও বেআইনি। তাই কষ্ট করে ওভারব্রিজ দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ওভার ব্রিজের উঠতে গিয়ে প্রথমে মানুষের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করতে হয়, এটা খবুই খারাপ লাগে।

ওভার ব্রিজ দিয়ে মিনিটে চলাচল করে সাড়ে ৫জন

ছোট ভাইকে নিয়ে ফকিরাপুল খালা-বাড়ি যাচ্ছেন মহিউদ্দিন রিপন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাড়ির সামনে থেকে গাড়িতে উঠে পল্টন নেমেছি। ছোট ভাইকে বায়তুল মোকারম মসজিদ দেখিয়েছি। রাস্তার দৃশ্য দেখার জন্য ওভারব্রিজে উঠেছি। কিন্তু এখানে দাঁড়িয়ে থাকা দায়। এতো বড় মসজিদের পাশের ওভার ব্রিজের মানুষ চলাচলা ক‍রার মতো অবস্থা নেই।

নাম প্রকাশ না করে ব্রিজের নীচের একটি চায়ের দোকানের কর্মচারী বাংলানিউজকে বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে এই দোকানে কাজ করেন তিনি। দোকানটির মালিক আব্দুর রহমান। তার এই দোকানে মোট ৭জন কর্মচারী ৩ শিফটে কাজ করেন।

একটু হিসাব করে দেখা গেল, সকাল ১০:০৫ থেকে ১০:৩৫ পর্যন্ত আধাঘণ্টায় ওভার ব্রিজ দিয়ে মাত্র ১৬৫জন রাস্তা পার হয়েছেন। তার মানে প্রতি মিনিটে মাত্র ছয় জনেরও কম ওভার ব্রিজটি ব্যবহার করছেন।  আর দুইজন শিশুসহ মোট ২২ জন ওভার ব্রিজটি দেখতে ও বিশ্রাম নিতে এসেছেন। যারা এই ওভারব্রিজ দিয়ে পারাপার হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই মুখে কাপড় দিয়ে নাক চেপে যেতে দেখা গেছে।

অথচ একই সময়ে ব্রিজটির ঠিক পশ্চিমে রাস্তার ওপরে থাকা লোহার বেরিকেড ভেঙে যাওয়া জায়গা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১হাজার ২৩৩ জন রাস্তা পার হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৮
এমএফআই/ এসআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।