শনিবার (২৩ জুন) রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদ অধিবেশনে বাজেট আলোচনা শেষে বিশেষ আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু সংগঠনের জন্য মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। মানুষ সংগঠন ছাড়ে মন্ত্রীত্বের আশায় আর তিনি মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন সংগঠনের জন্য। এই ঘঠনা মনে হয় এই দেশে আর একটিও নেই। আমার তার আদর্শ নিয়ে চলি, আওয়ামী লীগ সেই আদর্শ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নে উদ্ভাসিত হয়ে আওয়ামী লীগ জাতিকে সেবা করে যাচ্ছে, সেবা করে যাবে। বাংলার জনগণ যে আস্থা আওয়ামী লীগের ওপর রেখেছে। আমরা তার সন্মান দিচ্ছি এবং সন্মান দিয়ে যাব। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে আমাদের পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি গ্রামকেই একটি নগরে রূপান্তরের মাধ্যমে গ্রামের মানুষকে একেবারে নগরবাসীরর মতো উন্নত জীবন উপহার দিতে সক্ষম হব। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে এটাই হোক প্রতিজ্ঞা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এই অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক মুক্তি দেবার জন্যই এই সংগ্রাম। বাঙালি জাতি একটি জাতি হিসেবে গড়ে উঠুক। তার স্বাতন্ত্রতা বজায় থাকুক এবং এই ভূখণ্ড বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করুক এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল দর্শন। আওয়ামী লীগই হচ্ছে একটি সংগঠন যে সংগঠনের রাজনৈতিক আদর্শ আছে, নীতি আছে, দেশ ও জাতির জন্য একটি দিক দর্শনও আছে। এবং সেই দর্শন নিয়েই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতা এই সংগঠনটিকে এমনভাবে গড়ে তুলেছিলেন যে সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করেছিলেন।
তিনি বলেন, একটি জাতিকে মুক্তির স্বপ্ন দেখানো এবং স্বাধীনতার চেতনা উদ্ভুদ্ধ করা কষ্টের কাজ ছিল। তিনি তার সারাটা জীবনই শোষণ বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন। মুক্তি সংগ্রামের কথা বলেছেন। তিনি নিজে যেমন কারাবরণ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বছরের পর বছর কারা বরণ করে নির্যাতিত হয়েছে, জীবন দিয়েছে।
অধিকার আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে যে রাজনৈতিক দল মাটি ও মানুষ থেকে গড়ে ওঠে, সেই রাজনৈতিক দলই পারে জাতিকে কিছু দিতে। এটা আজ প্রমাণিত সত্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন ১৯৮১ সালে যখন আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয় তখন থেকে একটাই লক্ষ্য ছিল যে আদর্শ-নীতি নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে গেছেন। অর্থাৎ দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফুটানো, আর্থ সামাজিক উন্নয়নে স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাঙালি জাতি যেন বিশ্বে মাথা উঁচু করে সন্মানের সাথে বেঁচে থাকে আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ স্বপ্লন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উপনীত হয়েছে। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী করেছি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নীতিমালা ও লক্ষ্য সব সময় ছিল আমরা ক্ষমতায় গেলে কি কি কাজ করবো। কীভাবে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করবো, কীভাবে দারিদ্র হ্রাস করবো। আমাদের উন্নয়ন শুধু মুষ্টিমেয় গোষ্ঠির জন্য না। আমাদের উন্নয়ন ছিল বাংলাদেমের গ্রামে-গঞ্জে তৃণমূলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অভুক্ষ নর-নারী ক্ষুধার্থ মা বোনের ভাগ্য পরিবর্তন করা। ক্ষুধার্থ মানুসের ক্ষুধার জ্বালা মিটিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া।
গৃহহারা মানুষকে ঘর দেওয়া, চিকিৎসা সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করা। আর সে আদর্শকে মাথায় রেখেই আমরা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে বলেই আজ এগুলো সম্ভব হচ্ছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার মর্যাদা পেয়েছিল, নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলে আমরা উন্নয়নশীল দেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৬ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৮
এসএম/এমএএম/ এসআইএস