ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কমিশনের একার পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়: সুজন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৪ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
কমিশনের একার পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়: সুজন সুজনের সংবাদ সম্মেলন, ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: সরকার আন্তরিকভাবে সহযোগিতা না করলে কেবল নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটের আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

এজন্য আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য বেসরকারি এ সংস্থাটির পক্ষে সরকারের প্রতি উদার্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাসিক নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার (২৩ জুন) দুপুরে মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ আহ্বান জানান সুজনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে সুজন নেতারা বলেন, এখন যদি সিটি করপোরেশন সুষ্ঠু না হয়, তাহলে আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতিগতভাবে আমরা নতুন সংকটের মুখোমুখি হতে পরি। যা আমাদের একটি অনিশ্চিত ভবিষতের দিকেও নিয়ে যেতে পারে। কারণ নির্বাচন একটি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক পন্থা, যার মধ্যদিয়ে ভোটাররা তাদের স্বার্থে কাজ করার জন্য পছন্দের যোগ্য প্রার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেওয়ার সুযোগ পান।

কিন্তু সেই নির্বাচন প্রক্রিয়া যদি নিয়মতান্ত্রিক না হয়, তবে তা শুধু প্রশ্নবিদ্ধই হয় না, জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য বলেও বিবেচিত হয়। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করি, নির্বাচন পরিচালনার মূল দায়িত্বে নিয়োজিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এর জন্য আসন্ন রাজশাহীসহ তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন এক ধরনের পরীক্ষা।

কেননা এ বছরেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলে মানুষের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা সৃষ্টি হবে এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠুতা সম্পর্কে আশাবাদ জাগবে। ফলে তা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে সিটি নির্বাচন ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

তারা আরও বলেন, আমরা জানি সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সংবিধানের ১২৩ (৩)-এর (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে’ নির্বাচন করার বিধান রয়েছে।  

এ বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আগামী ৩১ অক্টোবর ২০১৮ থেকে ২৮ জানুয়ারি ২০১৯-এর মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা মনে করি, এখন থেকে বড় বড় যে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে, সারাদেশের সচেতন নাগরিকদের দৃষ্টি থাকবে সেদিকে। এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে একদিকে যেমন মানুষ নির্বাচন পরিচালনায় কমিশনের আন্তরিকতা, সক্ষমতা, নৈতিকতা, সাহসিকতা ইত্যাদি দিকগুলো পরখ করার সুযোগ পাবেন।

অপরদিকে এ নির্বাচনগুলোকে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পরিমাপক হিসেবেও বিবেচনায় নেবেন ভোটাররা। কেননা, মেয়র পদের নির্বাচন হবে রাজনৈতিক দলভিত্তিকভাবে, দলীয় প্রতীকে। আর রাজনৈতিক দলভিত্তিক নির্বাচন হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের সামনে চ্যালেঞ্জ আরও বেড়ে গেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করে সুজন নেতারা।

আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুজনের এরিয়া কো-অডিনেটর সুব্রত পাল। এছাড়া সুজন জেলার সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন, মহানগর সভাপতি পিয়ার বক্স ও সদস্য জামাত খান।   

এর আগে ২০১৩ সালের ১৫ জুন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল আনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আগামী ২৮ জুন; মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ ও ২ জুলাই; প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ জুলাই এবং ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ শেষ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।