ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঘুম চোখে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোয় এ দুর্ঘটনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
ঘুম চোখে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোয় এ দুর্ঘটনা দুর্ঘটনা কবলিত জায়গা। ছবি: বাংলানিউজ

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের  মহেশপুর এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। 

এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ৯ জন ও হাসপাতাল নেওয়ার পথে ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়।  

এ ঘটনায় আহত হয় কমপক্ষে ৩০ জন।

আহতদের পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।

এ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চোখে ঘুম নিয়ে চালকের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং অসাবধানতাকেই দায়ী করেছেন হাইওয়ে পুলিশ।

গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আলম এন্টারপ্রাইজের বাসটি ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা দেয়।  

আহত যাত্রীদের তথ্যমতে, চালক শুরু থেকেই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। যাত্রীরা বারবার নিষেধ করলেও তিনি কোনো কথা শোনেননি।  

এছাড়াও বাসটিতে অতিরিক্ত যাত্রী থাকা সত্বেও বাসের ছাদেও ১৩ জন যাত্রী ছিল। পলাশবাড়ীর মহেশপুর এলাকায় আসার পর চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে খাদে পড়ে বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জন মারা যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়। আহত অন্তত ৩০ জনকে পলাশবাড়ী ফায়ার সার্ভিস ও গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে পলাশবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।  

তিনি আরও বলেন, বাসের উপর যাত্রী বহনে বারবার নিষেধ সত্ত্বেও যাত্রী বহন থেমে নেই। যাত্রীরাও কম টাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছেন। এসব কারণে বেড়েই চলেছে দুর্ঘটনা। তাই মালিক, চালকসহ যাত্রীদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে।  

পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন আ. হান্নান মিয়া। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাসে ওঠার পর চালকের দ্রুতগতি দেখে সবাই তাকে নিয়ন্ত্রণ করে চালানোর কথা বললেও শোনেনি চালক। এক পর্যায়ে হঠাৎ করেই ফাঁকা জায়গায় একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাসটি খাদে পড়ে যায়।  

পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ হোসেন দুর্ঘটনার জন্য চালককেই দায়ী করে বলেন, ‘ঘুমের ঘোরে চালক বেপরোয়া গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন। তাছাড়া দুর্ঘটনার সময় মহাসড়কে কোনো যানজট ছিলো না। এমনকি যে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানকার সড়কের অবস্থাও ভালো। তাই প্রাথমিক তদন্ত ও যাত্রীদের বক্তব্যে দুর্ঘটনার জন্য চালকই দায়ী।  

এদিকে, নিহত ১৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করে তাদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল।  

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে, তারা হলেন-কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সুমন (৩৫), মঞ্জুর (৩৫), ঠাকুরগাঁওয়ের নুর আলম (৩০), রুবেল (৩৫), মমতা বেগম (৩৫), নিলফামারীর হাফিজুর রহমান (৪০), সুরেশ (৫০), চয়ন (৮), সিরাজগঞ্জের বাদশাহ (৩৫), টাঙ্গাইলের আবু সাইদ (৩৫), তেঁতুলিয়ার আশরাফুল (৩৫), দিনাজপুরের নাইম ইসলাম (৩৫) ও যশোরের আলী হোসেন (৪০)।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।