এছাড়া একই দিন থেকে শুরু হয়েছে ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ। যা শেষ হবে ৬ জুলাই।
শুক্রবার (২২ জুন) প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখা যায়, সরকারি বিভিন্ন স্টলগুলোতে হরেক প্রজাতির ফল প্রদর্শিত হচ্ছে। আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, লিচু, আনারস ছাড়াও সেখানে স্থান পেয়েছে কাউফল, কামরাঙা, জাম, মারফা, অরবরই, খেজুর, পেয়ারা, আমড়া, বেতফল, নারিকেলী লেবু, আদাজামির, জরালেবু, লটকন, আমলকি, বেল, সুপারি, সিডলেস লেবু, সাতকরা, রাম্বুটান, তৈকর, ড্রাগনফল, করমচা, জাম্বুরা, ল্যাংশায়ার, কদবেল, কাঠবাদাম, ডুমুর, জামরুল, চালতা, বিলিম্বি, নারকেল, আশফল, আঙ্গুর, বিলাতি গাব, সফেদা, জামরুল ও তালের মতো ফল। সরকারি স্টলগুলোতে এসব ফল রয়েছে শুধু প্রদর্শনীর জন্য। কিনতে না পেরে কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আসা দর্শনার্থীরা।
অন্যদিকে মেলার বেসরকারি স্টলগুলো থেকে আসা দর্শনার্থীরা সুনির্দিষ্ট ও সাশ্রয়ী মূল্যে রাসায়নিকমুক্ত বিভিন্ন জাতের ফল ক্রয় করতে পেরে ব্যাপক আনন্দ প্রকাশ করেছে বাংলানিউজের কাছে। তবে সেসব স্টলগুলোতে রয়েছে শুধু আম, কাঁঠাল, আনারস, ড্রাগনফল, লিচু, কলার মতো কয়েকটি ফল। এসব বিক্রেতাদের কেউবা সরাসরি কৃষক বা নিজের চাষকৃত ফল বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। বাকিটা বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের স্টল।
এছাড়া মেলায় সরকারিভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে বিভিন্ন ফলের তৈরি বিভিন্ন খাবারের পদ ও নতুন জাতের চাষ পদ্ধতি। সেখানে প্রায় ৫০ কেজি ওজনের কাঁঠাল ও ৭৭ সংখ্যক প্রজাতির আমও দেখা গেছে। আবার বেসরকারিভাবে বিভিন্ন ফলের জুস, মাশরুম ও ভুট্টার তৈরি বিভিন্ন খাবারও সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি হতে দেখা গেছে। পুরো মেলার সাজসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে ফল। এসব কারণেই প্রথমদিনের প্রদর্শনীতে ক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে ‘জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৮’।
রাজধানীর উত্তরা থেকে আসা তুষার-নীলা দম্পতি তাদের দুই বাচ্চাকে নিয়ে সকাল ১০টায় এসেছিলেন মেলায়। দুপুর পর্যন্ত ঘুরে ফল কিনে ফিরে গেছেন তারা। বাংলানিউজকে তারা বলেন, এ মেলায় যেসব ফল প্রদর্শিত হচ্ছে সেগুলো এখন গ্রামে গেলে দেখা যায় না। এগুলো বাচ্চাদের চেনাতে পেরে ভালো লাগছে। কিনতে পারলে আরো ভালো লাগতো। কিনতে না পারার কষ্টটা লাঘব হয়েছে সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত আম কিনতে পেরে। এখানে সরকারের পক্ষ থেকে কেমিক্যাল টেস্ট করা হচ্ছে আর অনেক ফল পচে যেতে দেখেও নিশ্চিত হয়েছি।
এদিকে মেলায় অংশ নেওয়া প্রাণের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, ড্রাগনফল ২২০, পেয়ারা ৬০, হিমসাগর ৭৫, লক্ষণভোগ ৬০, অরাজম ৬০, ল্যাংড়া ৮০, আম্রপালি ৮০, আশ্বিনা ৬০, রানীভোগ ৬০ টাকা কেজি দরে এবং আনারস ৬০ টাকা পিস, কলা হালিপ্রতি ৩৫ টাকা ও কাঁঠাল আকারভেদে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
প্রাণের বিক্রেতা ইমা জানান, এ মূল্য সরকার থেকে প্রদর্শনীর জন্য নির্ধারত মূল্য। দাম ও ফলে রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত করা হয়েছে কিনা সে মনিটরিং সরকারি লোকজন প্রতিনিয়ত করছে।
বান্দরবান থেকে আসা গ্রিন টাচ এগ্রো ফার্ম কোম্পানির পক্ষ থেকে বিক্রি করা হচ্ছে ফলের জুস। ঠাণ্ডা পানি ও সাতক্ষীরার মধু মিশ্রিত এ ফলের জুসের স্টলেও দেখা গেছে উৎসাহী ক্রেতাদের ভিড়। আবার ভুট্টা ও মাশরুমের তৈরি বিভিন্ন খাবারের স্টলেও দেখা গেছে ভিড়।
পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক মো. মেহেদী মাসুদ বলেন, সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ফলদ বৃক্ষ রোপণ ও এর পরিচর্যার ওপর একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে জেলা ও উপজেলা পর্যায় থেকে ১০ জন সফল কৃষক অংশগ্রহণ করেছেন। আর স্টলে বিক্রিত ফলের মানও দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তাছাড়া যেসব ফল উপস্থাপিত হয়েছে তা অনেকে চেনেই না। এসব কারণেই প্রদর্শনীটি জমজমাট হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৮
এমএএম/আরবি/