পরে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান, ১৬ হাজার ৯৭২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে নয়টি নতুন ও পাঁচটি সংশোধিত প্রকল্প।
৪ হাজার ৬৩৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পটি জুলাই ২০১৮ সাল থেকে জুন ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের পুরো অর্থায়ন সরকারিভাবে করা হবে।
এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) থেকে সর্বশেষ উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা। এতে বাংলাদেশি পাসপোর্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধির সঙ্গে বর্হিবিশ্বে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।
৩ হাজার ২৭৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সমিশন গ্রিড সম্প্রসারণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর; বরিশাল বিভাগের বরিশাল; রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী ও বগুড়া জেলার মানুষের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুত চাহিদা পূরণ করা হবে।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনে ৬১১ কোটি ৮ লাখ টাকার সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন করা হয় একনেকে। ২৭৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় নেওয়া প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা ছিলো। সংশোধিত প্রকল্পটি ব্যয় বাড়ানোর সঙ্গে বাস্তবায়ন সময় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
২৫০ কোটি টাকায় দেশব্যাপী ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার প্রবর্তন (১ম পর্যায়) প্রকল্পের অনুমোদন করা হয়। এটি ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
৯৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২১টি জেলার সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা প্রদান প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
৬৬৩ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ব্লু গোল্ড প্রোগ্রাম: প্রোগ্রাম ফর ইনট্রিগেটেড সাসটেইনেবল ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট বাই ইমপ্রুভিং ওয়াটার অ্যান্ড প্রোডাকটিভ সেক্টরস ইন সিলেকটিভ পোল্ডারস’ সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পটি ৫৬৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা ছিলো। সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় বাড়িয়ে ৬৬৩ কোটি ০৮ লাখ টাকা করা হয়েছে। বাস্তবায়ন সময় ২০২০ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩৫১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন সিটি করপোরেশন, একটি পৌরসভা ও দু’টি উপজেলায় ডিজিটাল সার্ভে এবং সেটেলমেন্ট অপারেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বাস্তবায়নে নতুন প্রকল্প অনুমোদন করা হয় একনেকে। এটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
১৬৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে স্থানীয় সরকারের উদ্যোগ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
৯৫০ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ডিপিডিসি’র আওতায় ঢাকার কারওয়ান বাজারে ভূ-গর্ভস্থ উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন করা হয়। এটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
৬৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে লং টার্ম সার্ভিস এগ্রিমেন্ট ফর ভেড়ামারা কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পের অনুমোদন কর হয়। এটি ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
লাকসাম এবং চিনকী আস্তানার মধ্যে ডাবল লাইন ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধন অনুমোদন করা হয়। ৫০১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিলো। তৃতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ৮১৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। বাস্তবায়ন সময় ২০১৮ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিগন্যালিংসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার সেকশনে ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধন অনুমোদন করা হয়। ৭২৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা ছিলো। তৃতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ২ হাজার ১৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়ন সময় ২০১৮ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণে ৮৭৪ কোটি টাকা ৮ লাখ টাকা ব্যয়ের সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। ২০১৫ সালে নেওয়া প্রকল্পটি ৪৩৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন সময়সীমা ছিলো। প্রকল্পের প্রথম সংশোধনে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ৮৭৪ কোটি ৮ লাখ টাকা করা হয়েছে এবং বাস্তবায়ন সময় ২০২০ সালের জুন মাস।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য লজিস্টিকস ও ফ্লিট মেইনটেন্যান্স ফ্যাসিলিটিস গড়ে তুলতে ৪৪৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
পদ্মাসেতুতে ব্যয় বেড়েছে ১৪শ’ কোটি টাকা। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ১১৬২ দশমিক ৬৭ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য অতিরিক্ত ১৪ শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে একনেক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৮
এমইউএম/আরআর