ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাটোরে স্ত্রী হত্যায় স্বামীসহ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৮
নাটোরে স্ত্রী হত্যায় স্বামীসহ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড শাহমিম হোসেন ও তার স্ত্রী রেজিনা পারভিন রুপালী

নাটোর: নাটোরের সিংড়া উপজেলায় স্ত্রী রেজিনা পারভিন রুপালীকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২১ জুন) দুপুর ১২টায় আসামিদের অনুপস্থিতিতে জেলা ও দায়রা জজ মো. রেজাউল করিম এ আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রুপালীর স্বামী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার দক্ষিণ নগরাজপুর পচাবাড়িয়া এলাকার শাহ জামান মানিকের ছেলে শাহমিম হোসেন (৩২) ও তার বন্ধু একই উপজেলার ধর্মপুর গাংগইলহাট এলাকার নুর ইসলামের ছেলে রমিজুল আলম (৩০)।

 

স্ত্রী রেজিনা পারভিন রুপালী লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার ধুমেরকুটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে।

নাটোর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, রেজিনা পারভিন রুপালী বগুড়ায় মেরি স্টোপসে চাকরি করাকালীন অবস্থায় শাহমিমের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু ছেলের পরিবার (বাবা-মা) তাদের বিয়ে মেনে নেয় না। এ অবস্থায় ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সে সময় রুপালীকে ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেয় শাহমিম।

পরবর্তীতে রুপালীকে ফুসলিয়ে ২০১৬ সালের ২৩ আগস্টে ফের দ্বিতীয় বার বিয়ে করে শাহমিম এবং তার কাছ থেকে ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।

২২ ডিসেম্বর সিংড়া উপজেলার রনবাঘা এলাকায় রুপালীকে ডেকে নিয়ে যায় শাহমিম ও তার বন্ধু রমিজুল। এক পর্যায়ে রাত ১১ টার সময় রুপালীর গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মরদেহটি গুম করার জন্য আগুন দিয়ে শরীর ঝলসে দিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

এরপর তিনদিন পর ২৫ ডিসেম্বর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ রুপালীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ওই দিন রুপালীর বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে শাহমিমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে সিংড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্বামী শাহমিম হোসেনকে আটক করে।

পরে ২৭ ডিসেম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম প্রকাশ করেন।  

মামলাটি তদন্ত করেন সিংড়া থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেবব্রত দাস। তিনি মামলা তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ শাহমিম ও সহযোগী রমিজুলকে অভিযুক্ত আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

তিনি আরও জানান, মামলাটি আদালতে চলাকালীন সময়ে আসামি শাহমিম হোসেন কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর উচ্চ আদালতে মামলার নথি জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন নেন। পরে টের পেয়ে মামলার বাদি আব্দুর রাজ্জাক ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল উচ্চ আদালতে গিয়ে তাদের জামিন বাতিলের দাবি জানালে তাদের জামিন আদেশ বাতিল হয়ে যায়।

এ মামলায় ২৪ এপ্রিল আসামিদের নাটোর আদালতে হাজিরের দিন ধার্য্য থাকলেও তারা হাজিরা দেননি। এতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। মামলার দীর্ঘ শুনানী ও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারক এই রায় দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২৯ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৮ আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।